প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে পদত্যাগে ৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

ইমরান খানের পদত্যাগের দাবিতে ‘মাওলানা ডিজেল’ খ্যাত ওলামা, ডানপন্থি জামিয়াত উলামা-ই-ইসলাম পার্টির প্রধান ফজলুর রহমানের নেতৃত্বে ইসলামাবাদে চলছে বিশাল আন্দোলন। সে আন্দোলন থেকে পাকিস্তানে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগের জন্য ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন মাওলানা ডিজেল। পদত্যাগ হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) রাতে ‘আজাদি মার্চ’ নামে চলমান এ আন্দোলনে বক্তৃতাকালে এমন ঘোষণা দেন উলামা-ই-ইসলাম পার্টির নেতা। ২০১৮ সালের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ইমরান খানের উদ্দেশ্যে এ আল্টিমেটাম দেন তিনি। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম থেকে এ তথ্য জানা যায়।

২৭ অক্টোবর দক্ষিণের শহর করাচি থেকে প্রায় ২ হাজার কিলোমিটারের দীর্ঘ এক পদযাত্রা শেষে গত শুক্রবার (১ নভেম্বর) ভোরের দিকে মাওলানা ডিজেল ও অন্য বিরোধী দলগুলোর হাজার হাজার অনুসারী ইমরান খানের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী ইসলামাবাদে জড়ো হয়। এরপর থেকে সেখানে তাদের অবস্থান ধর্মঘট চলছে।

বৃহস্পতিবার হাজার হাজার আন্দোলনকারীর সামনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে মাওলানা ডিজেল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ছাড়া যেন সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সমঝোতাকারী আমাদের কাছে না আসে।

তিনি বলেন, (আমাদের কাছে) আসার কোনো দরকার নাই। যদি আসতেই হয়, তাহলে ক্ষমতার প্রাসাদ ত্যাগ করেই আসতে হবে। তোমরা (সরকার) আজ অন্ধগলির শেষ সীমানায়। এখন তোমাদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সেখানেই থাকবে নাকি বাইরে বেরিয়ে এসে জনগণকে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেবে।

বিরোধী রাহবার কমিটিও এ অবস্থায় সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে। এ আন্দোলনে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের দলেরও সমর্থন রয়েছে।

জামিয়াত উলামা-ই-ইসলাম পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা আকরাম খান দুররানি বলেন, আগামী দুই দিনের আল্টিমেটামের পর আজাদি মার্চ অন্য দিকে মোড় নেবে। দলের লোকজন সংকল্পবদ্ধ। তারা প্রয়োজনে ৩ মাস অবস্থান ধর্মঘটে থাকবে।

সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্নভাবে মাওলানা ডিজেলকে সমঝোতার টেবিলে বসানোর চেষ্টা চলছে। এর আগে ইমরান খান জানিয়েছেন, পদত্যাগ ছাড়া বিরোধীদের বাকি সব দাবি তিনি মেনে নেবেন। তারপরও আন্দোলন চলছে। ক্ষমতায় বসার পর এই প্রথম বড় কোনো সরকারবিরোধী আন্দোলনের মুখে পড়লেন ইমরান খান।

সরকারবিরোধী দলগুলো জানায়, গত বছর দেশটিতে হওয়া নির্বাচনে সেনাবাহিনী অবৈধ হস্তক্ষেপ করে। এবং কারচুপির মধ্য দিয়ে জেনারেলরা নিজেদের পছন্দের পাত্র ইমরান খানকে মসনদে বসায়। পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক সরকারকে অস্থিতিশীল করতে প্রায়শই সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পর্দার আড়ালে থেকে নানা ধরনের চাল চালে বলে অভিযোগ রয়েছে।যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।