প্রতিহিংসার রাজনীতি ভুলে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন: প্রধানমন্ত্রীকে রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বর্তমানে ভীষণ অসুস্থ। তিনি চলাফেলা করতে পারছেন না, নিজ হাতে খেতে পারছেন না। এমতাবস্থায় সরকারপ্রধানকে বলব- প্রতিহিংসার রাজনীতি ভুলে গিয়ে খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিন। নইলে জনগণের তীব্র ক্ষোভে আপনার মসনদ ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে।

মঙ্গলবার সকালে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মিছিল শেষে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের থেকে মিছিল বের করেন নেতাকর্মীরা।

মিছিলটি নাইটিঙ্গেল মোড় ঘুরে আবারও বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন রুহুল কবির রিজভী।

মিছিল শেষে পথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, জাতীয়তাবাদী যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহীন, ছাত্রদল নেতা কাউসার প্রমুখ।

পথসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রিজভী আরও বলেন, মিডনাইট নির্বাচনের অবৈধ সরকার দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণভাবে গায়ের জোরে বন্দি করে রেখেছে। বন্দি করার মধ্য দিয়ে তারা শুধু দেশের একজন জনপ্রিয় নেত্রীকেই বন্দি করে রাখেনি, বরং তারা গোটা দেশ, গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকেও এক শ্বাসরুদ্ধকর বন্দিশালায় আটকে রেখেছে।

তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির মধ্য দিয়েই গণতন্ত্র ফিরবে এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিরাপদ হবে, দেশের মানুষ নিরাপত্তা ফিরে পাবে। তাই দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য আমাদের আর বসে থাকলে চলবে না, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

তিনি বলেন, হেনস্তা ও অপমানের ভয়ে নাগরিক সমাজ এখন স্বাধীন মতপ্রকাশের সাহস হারিয়ে ফেলেছে। এই দুঃসহ অবস্থার মধ্যেও অবৈধ সরকারের পক্ষে একদল উচ্ছিষ্টভোগী কিছু লোক গুণকীর্তনে মানুষ এখন অতীষ্ঠ হয়ে উঠেছে। দলীয়করণ, ভীতিপ্রদর্শন ও নানা অপকৌশলের মাধ্যমে দেশের বিচারব্যবস্থাকে আজ প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। সারা দেশে প্রকাশ্য সন্ত্রাস করছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয় না। তাদের কোনো বিচার হয় না।

রিজভী বলেন, এই দুঃসহ অবস্থা থেকে বাংলাদেশের মানুষ মুক্তি চায়। তারা তাদের অধিকার ফিরে পেতে চায়। মানুষের সেই আশা-আকাঙ্ক্ষাকে বাধাগ্রস্ত করতেই শাসকগোষ্ঠী দেশনেত্রীকে মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি করে রেখেছে। কেবল নিজেদের দলীয় স্বার্থে ও সুবিধার্থে সংবিধান বদল করে গায়ের জোরে যারা এখন ক্ষমতায় টিকে আছে, তারা জনগণের ভোটে আসেনি। দেশের মানুষ তাদের নির্বাচিত করেনি। তাদের দেশ পরিচালনার প্রতি জনগণের সায় ও সম্মতি নেই। নৈতিক দিক থেকে এরা অবৈধ। তাই তারা যতই হুংকার ও গর্জন করুক না কেন, তাদের কোনো নৈতিক সাহস ও মনোবল নেই।