দুরুল হুদা কাণ্ডে পদ গেল রাবি ছাত্র উপদেষ্টার

রাবি প্রতিনিধি: বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ছাত্র উপদেষ্টা পদ থেকে অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানুকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে অধ্যাপক লায়লা দাবি করেছেন, যৌন হয়রানিকারি রাবি স্কুল শিক্ষক দুরুল হুদাকে বাঁচানোর জন্যই তাকে ছাত্র উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান এক আদেশে এই অব্যাহতি দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার অধ্যাপক এম এ বারী স্বাক্ষরিত এক আদেশ পত্রে বিষয়টি জানা গেছে।

আদেশ পত্রে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টার পদ থেকে অব্যহতি দেয়া হলো। সেই সঙ্গে এই পদে নতুন কাউকে নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান ছাত্র উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র বলছে, রাবি স্কুলের শিক্ষক দুরুল হুদার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীর অভিযোগ তুলেন সদ্য বিদায়ী ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু। তার মেয়েকে যৌন হয়রানি করা হয়েছে বলে থানায় এক মামলা করেছিলেন তিনি।

তবে অভিযুক্ত শিক্ষকের দাবি, তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানো হয়েছে। ছাত্র উপদেষ্টার বড় মেয়েকে বিয়ে না করার কারণে তারর বিরুদ্ধে মিথ্যা যৌন হয়রানীর অভিযোগ আনা হয়েছে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেছিলেন অভিযুক্ত শিক্ষক। তবে হাইকোর্টের এক রিটের শুনানিতে অভিযুক্ত শিক্ষককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অপসারণ দিতে বলা হয়েছিল। হাইকোর্টের এই রিটের বিষয়টি ভালোভাবে নিতে পারেননি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুস সোবহান।

অব্যাহতির বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক লায়লা আরজুমান বানু বলেন, রাবি স্কুল শিক্ষক দুরুল হুদার সাময়িক বহিস্কার নিয়ে গত ২০ ফেব্রুয়ারি এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম আব্দুস সোবহানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি নোটিশ আসে।

এসময় উপাচার্য আমাকে ডেকে বলেন, এই রিট তুমি করেছো? এটা প্রশাসন বিরোধী কাজ। তাই তুমি প্রশাসনে থাকতে পারো না। তোমার এখানে থাকার অধিকার নেই। শেষে আবার বলেছে যে, তুমি ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করছো না। এরপর আমাকে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করতে বলেন তিনি (উপাচার্য)। আমি পদত্যাগ করতে রাজি না হওয়াতে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু আমি বলেছি, আমি কোন রিট করেনি। এক মানবাধিকারকর্মী এই রিট করেছে। তারপরও তিনি আমাকে বলেছিলেন, আমি যেহেতু হাইকোর্টে রিট করেছি সে কারণে বিশ্ববিদ্যালয়েরর প্রশাসনিক পদ থেকে যেন অব্যাহতি নিই। তবে আমি ওনাকে বলেছি, আমি অব্যাহতি নিতে পারবো না। আমি সঠিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় দায়িত্ব পালন করছি। তারপরও যৌন হয়রানিকারি এক স্কুল শিক্ষককে বাঁচানোর জন্যই আমাকে ছাত্র উপদেষ্টা পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তিনি আরো বলেন, এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।
এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আবদুস সোবহানকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।