করোনা থেকে মুক্তি পেতে চাইলে ‘নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন’

যশোর শহরতলির ক্যান্টনমেন্ট খয়েরতলা বাজারে পণ্য ক্রয়ের জন্য ক্রেতাদের জন্য নির্দিষ্ট দূরত্বে সাদা রং দিয়ে গোল বৃত্ত তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। ক্রেতারা ওই বৃত্তের মধ্যে থেকেই প্রয়োজনীয় পণ্য কিনছেন। পাশাপাশি সব দোকানি মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাভস ব্যবহার করছেন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে এই অভিনব পদ্ধতিতে কেনা-বেচা চলছে এই ক্যান্টনমেন্ট খয়েরতলা বাজারে।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের সব দোকানপাট বন্ধ হলেও খোলা রয়েছে কাঁচাবাজার, মুদি ও ওষুধের দোকান। এ অবস্থায় এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে এই পদ্ধতি অবলম্বন করে খয়েরতলা বাজারে বাজার করছেন যশোরের নুরপুর, ডাকাতিয়া, বিজয়নগর ও যশোর ক্যান্টনমেন্টসহ আরো তিন চার গ্রামের সকল ক্রেতারা। দোকানের সামনে বৃত্ত এঁকে দিয়ে সেখানে অবস্থান করে নিয়ম মেনে কেনাকাটা করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এতে ক্রেতা-বিক্রেতা ও ক্রেতাদের নিজেদের মধ্যেও দূরত্ব বজায় থাকছে।

যশোরে ‘করোনা ভাইরাস’ থেকে বাচতে হলে নিরপদ দূরত্ব বজায় রাখুন এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জনতা এক্সপ্রেস নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা বাজারের দোকানগুলোর সামনে এক মিটার দূরত্বে বৃত্ত এঁকে দিয়েছেন। ওই বৃত্তের বাইরে থাকলে পণ্য দিচ্ছেন না দোকানিরা। আজ শুক্রবার (২৭ মার্চ) থেকে এই পদ্ধতি চালু করা হয়েছে।

জনতা এক্সপেস গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক আসাদুজ্জামান শাওন বলেন, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) রাতে বাজার বন্ধের পরে এই বৃত্ত এঁকে দেয়া হয়। সাধারণ মানুষের ভিতরে যেনো সচেতনতা বাড়াতে পারি তাই আমাদের এই কার্যক্রম। কারণ গ্রামের মানুষ অনেকেই সচেতন না।

শাওন আরও বলেন, ‌দোকানিদের বলে দেওয়া হয়েছে বৃত্তের মধ্যে না থাকলে পণ্য বিক্রি না করতে। দোকানিরা নিরাপদ থাকার স্বার্থে আমাদের কথা শুনেছেন। দোকানিদের মধ্যে বিনামূল্যে মাস্ক ও সাবান বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া বাজারের দুটি পয়েন্টে সাবান দিয়ে হাত দোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ইউসুফ আলী নামে এক কাঁচামালের দোকানি বলেন, ‌এলাকার ছেলেরা খুব ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। দোকানে একাধিক লোক এলে তাদের বৃত্তের মধ্যে দাঁড়িয়ে পর্যায়ক্রমে পণ্য নিতে অনুরোধ করছি। সবাই তা মেনেই পণ্য কিনছেন।

বাজার করতে আসা কয়েকজন ক্রেতা জানান, ‌সকালে এসে বৃত্ত আঁকা দেখেছেন। দোকানিরা বলেছে বৃত্তের মধ্যে দাঁড়িয়ে একে একে বাজার করতে হবে। এটি খুব ভালো উদ্যোগ। তাছাড়া বাজারে প্রচুর লোক। কে করোনা ভাইরাস বহন করছে তা জানা নেই।

স্থানীয়রা বলেন, এটি একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। সব বাজারে এমন পদ্ধতি গ্রহণ করা হলে তা আমাদের সবার জন্যই মঙ্গল।

জনতা এক্সপ্রেস সেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আসাদুজ্জামান শাওন, সদস্য মুস্তাকিন, তুহিন, জহুরুল, আলমগীর, সোহাগ ও শাহারুল ইসলাম ফারদিন করোনা ভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে ‘নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন’ এই কার্যক্রমটি সফল করেছেন।