ট্রাম্পের ‘চীনঘেঁষা’ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

who

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) কড়া সমালোচনা করে প্রতিষ্ঠানটি ‘অনেক বেশি চীনঘেঁষা’ বলে মঙ্গলবার মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তার এ অভিযোগ বুধবার প্রত্যাখ্যান করেছে বৈশ্বিক এ সংস্থাটি।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় ডব্লিউএইচও বাজে পরামর্শ দিয়েছে অভিযোগ করে মঙ্গলবার তাদের জন্য বরাদ্দ মার্কিন তহবিল স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। খবর রয়টার্স।

ট্রাম্পের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে ডব্লিউএইচওর ইউরোপীয় অঞ্চলের পরিচালক হান্স ক্লুজি এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে বলেন, আমরা করোনা মহামারী মোকাবেলায় সঠিক পথে আছি। এখন তহবিল কাটছাঁটের সময় নয়।

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিচ যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের পক্ষ থেকে বলছি, এটা সুস্পষ্ট যে কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ড. তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসাসের নেতৃত্বে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অসাধারণ কাজ করছে।

তারা বিভিন্ন দেশে লাখ লাখ সরঞ্জাম সরবরাহ করছে, দেশগুলোকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে, নির্দেশনা দিচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার শক্তি দেখাচ্ছে।

কোভিড-১৯ এ যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর মধ্যেই দেশটির প্রেসিডন্ট মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কঠোর সমালোচনা করেন।

তিনি বলেন, সংস্থাটি সত্যিকার অর্থেই ধাক্কা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বেশি অর্থ নেয়া সত্ত্বেও তারা অনেকখানি চীনঘেঁষা। এদিকে আমরা ভালোমতো নজর দিচ্ছি।

ট্রাম্প মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে বিপুল পরিমাণ তহবিল দেয় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তারা একের পর এক ভুল করেছে। তাদের তহবিল বন্ধের বিষয়ে আমরা ভাবনা-চিন্তা করব।’

তিনি বলেন, ‘তারা (ডব্লিউএইচও) বলছে, এটা ভুল, ওটা ভুল। আরও কয়েক মাস আগেই তাদের এগুলো বলা উচিত ছিল। তবে তারা সেটা করেনি। তারা বিষয়টি জানত এবং এটা তাদের জানা উচিত ছিল। তারা ভুল জানিয়েছে। আমরা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জন্য অর্থ ব্যয় স্থগিত রাখতে যাচ্ছি।

মার্কিন স্ট্রেট ডিপার্টমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জন্য ৪০ কোটি ডলারের বেশি তহবিল দিয়েছে। অপরদিকে চীন দিয়েছে ৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার। যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক এ সংস্থাটির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দাতা।

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীলরা বৈশ্বিক মহামারীর সময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা করে আসছেন। বৈশ্বিক এ সংস্থাটি প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস নিয়ে চীনের ত্রুটিপূর্ণ তথ্যের ওপর অনেক বেশি নির্ভর করেছে বলেও অভিযোগ তাদের।

কয়েকদিন আগে রিপাবলিকান সিনেটর মার্কো রুবিও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান ড. তেদ্রোসকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

আর ট্রাম্পঘনিষ্ঠ সংসদ সদস্য লিন্ডসে গ্রাহাম বলেছেন, সিনেটের পরবর্তী বরাদ্দ বিলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জন্য কিছুই রাখা হবে না।