করোনায় বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে যশোরের অন্যতম খাজুরা পশুহাট চালু হয়েছে। করোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের কারণে গত ২৩ মার্চ থেকে এই হাটে বেচাকেনা বন্ধ ছিল। গত শনিবার বাঘারপাড়া উপজেলা প্রশাসন হাট ইজারাদারকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবিলম্বে হাট চালু করার নির্দেশনা প্রদান করেছেন। সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ভাটারআমতলায় হাট স্থানান্তর করে চালু করা হয়েছে। সপ্তাহের প্রতি রোববার সকাল ১০টায় হাট শুরু হবে। চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত।
সরেজমিনে রোববার হাটের দিন ঘুরে দেখা গেছে, যশোর-মাগুরা মহাসড়কের পাশে ভাটারআমতলায় তিন একর জমিতে হাট বসেছে। হাটে ঢুকতেই প্রবেশ পথে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত দু’জন লোককে চোখে পড়লো। তারা হাটে আসা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের শুরুতেই হাতে জীবানুনাশক স্প্রে করে দিচ্ছেন। পাশেই টিউবওয়েলে রাখা সাবান মেখে হাত পরিষ্কার করছেন সবাই। আর যাদের মুখে মাস্ক নেই তাদেরকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছেনা হাটে। হাটের চারিদিক বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘেরা। এর মধ্যে দু’পাশ থেকে লম্বালম্বি বাঁশ দিয়ে অনেকগুলো লাইন করা। দুরত্ব সহকারে এক লাইনে বিক্রেতারা সারিসারি পশু নিয়ে দাড়িয়ে আছেন। আর পাশের লাইনে ক্রেতা ও ব্যাপারীরা চললেন। দুর থেকে দরদামে বিকিকিনি চলছে।
মতিউর রহমান নামে এক বিক্রেতা বলেন, আগে হাটের মূল জায়গা কালিবাড়ীর সামনে গাদাগাদি অবস্থায় বেচাকেনা করতে হতো। বর্তমানে ভাটারআমতলায় হাট স্থানান্তর করায় সেই ঝামেলা নেই।
রেজাউল ইসলামে নামে এক ক্রেতা বলেন, পশুহাটে সামাজিক দরুত্ব বজায় থাকার কথা না থাকলে এ হাটে ভিন্ন চিত্র। হাট কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্যবিধি ও দুরত্ব বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে। সবার মুখে মাস্ক থাকায় এখানে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি একেবারেই কম।
গরু ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন ব্যাপারী বলেন, এত জায়গা জুড়ে যশোরে আর কোন পশুহাট বসে না। মহাসড়কের পাশেই হাট বসায় যাতায়াত ব্যবস্থা আগের থেকে সহজ হয়েছে।
হাট ইজারাদার রুবেল রানা বলেন, প্রশাসনের নির্দেশে হাট চালু করা হয়েছে। মাস্ক ব্যতীত কাউকে হাটে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। হাটের আগের দিন মাইকিং করে চালানো প্রচারণা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে দ্বায়িত্ব দেওয়া কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সেনাসদস্যরা সরেজমিনে হাট ঘুরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। সকলের সহযোগিতায় এ ধারাবাহিতকা বজায় থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) তানিয়া আফরোজ বলেন, অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে সরকারি নির্দেশনায় সীমিত আকারে খাজুরা পশুহাট চালু করা হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী এখানে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে বিকিকিনি চলছে। সরেজমিনে হাট ঘুরেও তার ব্যতিক্রম পায়নি। হাটের দিন উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনী এর তদারকিতে থাকছে।