যশোরে যুবলীগ নেতা লিটন হত্যা মামলার আসামি কালা সাইদ আটক

যুবলীগ ঘোপ আঞ্চলিক কমিটির নেতা আরাফাত মুন্নাফ (৪৫) ওরফে লিটন হত্যা মামলার সন্দিগ্ধ আসামি এস এম ইউসুফ সাইদ ওরফে কালা সাইদকে (৪৮) যশোর সি আই ডি পুলিশ আটক করেছে। আটক সাইদ শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের এস এম আজাদের ছেলে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সি আই ডি পুলিশের পরিদর্শক হারুনর রশিদ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সাবেক এমপি আলী রেজা রাজুর ঘোপ সেন্ট্রাল রোডস্থ বাড়ির পাশ থেকে ১১ জুন বৃহস্পতিবার রাতে সাইদকে আটক করা হয়।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারুনর রশিদ বলেন, লিটন হত্যা মামলার এজার ভুক্ত আসামি ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের আলমগীর হোসেনের ছেলে রেজওয়ানের (২১) দেয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলকজবান বন্দির আসামি হিসেবে কালা সাইদকে আটক করা হয়। জবান বন্দিতে রেজওয়ান উল্লেখ করে লিটন মারা যাওয়ার একদিন আগে (১৮ সালের ২১ জুন) আসামি সুজনের পিতা আক্তারকে বলে “তোর ছেলেকে ভালো হয়ে যেতে বল ছিনতাই করতে নিষেধ কর”। আক্তার বিষয়টি নিয়ে ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের কালা সাইদের কাছে নালিশ দেয়। কালা সাইদ হুকুম দেয় যে ভাবেই হোক লিটনকে হত্যা করতে হবে। কালা সাইদের প্রকাশ্য হুকুমে ও সহযোগিতায় পূর্ব শত্রুতার জেরে ও পূর্বপরিকল্পিত ভাবে মামলার এজাহার নামীয় আসামিসহ ঘটনার সাথে জড়িতরা ১৮ সালের ২২ জুন রাতে ঘোপ সেন্ট্রাল রোড আঞ্চলিক অফিসে ঢুকে আরাফাত মুন্নাফ লিটনকে ধারালো চাকু দিয়ে মাজায়, মাথায়, হাতে, বুকে, পিঠে ও কপালে ১৬ টি ছুরিকাঘাত করে গুরুত্বর জখম করে। এসময় লিটনসহ অনেকে যুবলীগ অফিসে বসে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা দেখছিলেন। লিটনের চিৎকারে স্থানীয়রা প্রতিরোধের জন্য এগিয়ে গেলে আসামিরা দুটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। পরে লিটনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে চিৎকিসার জন্য ২৫০ শয্যার যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে লিটনের শরীরিক অবস্থার অবন্নতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পথিমধ্যে মাগুরায় পৌছুলে লিটনের শারীরিক অবস্থার আরো আবন্নতি হলে তাকে পুনরায় জেনারেল হাসপাতালে ফিরিয়ে আনার সময় পথিমধ্যে ২৩ জুন ভোরে লিটন মারা যায়।

লিটন হত্যাকান্ডের ঘটনায় চাচাতো ভাই রমজান উল ইসলাম পিন্টু বাদি হয়ে ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত নামা আরো কয়েকজনকে আসামি করে কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলা নাম্বার-৯২।তারিখ-২২.০৬.১৮।

মামলাটি প্রথমে কোতয়ালি থানা পুলিশ তদন্ত করে। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান কোতয়ালি থানার এস আই আমিরুজ্জামান। তদন্ত শেষে আমিরুজ্জামান আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। কিন্তু বাদি পক্ষের না রাজির কারণে পুনরায় মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত। পরে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মামলাটি ২০২০ সালে সি আই ডি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এপর্যন্ত মামলায় এজাহার নামীয় আসামিসহ মোট ৪ জনকে আটক করা হয়। এর মধ্যে এজাহার নামীয় আসামিরা হচ্ছে রেজওয়ান, সুজন, রাসেল ও হুকুমের আসামি কালা সাইদ।