মনিরামপুরে ঘের মালিক ও কর্মচারীকে মারপিট, ৫ লাখ টাকার মাছ লুট

monirampur jessore map

যশোরের মণিরামপুরে ঘের থেকে মাছ ধরার সময় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৫টি নৌকাসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার মাছ লুট করেছে সন্ত্রাসীরা। এসময় সন্ত্রাসীদের হামলায় ঘের মালিক বলরাম রায়সহ কর্মচারী সঞ্জিত কুমারকে মারপিট করে ঘের পাড়ে ফেলে রাখা হয়। খবর পেয়ে ঘেরের জমি মালিকসহ স্থানীয়রা ঘের মালিকসহ মারপিটের শিকার কর্মচারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়।

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩ টার দিকে উপজেলার বিলবোকড়েতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মণিরামপুর থানায় ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতানামাদের নামে অভিযোগ করা হয়েছে। এরা হলো উপজেলার পোড়াডাঙ্গা গ্রামের মানিক দত্তের ছেলে বৈদ্যনাথ, কুচলিয়া গ্রামের গৌর মল্লিকের ছেলে গোবিন্দ মল্লিক, বালিদাহ গ্রামের আনিছুর রহমান, ও অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী গ্রামের মৃত হরেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের ছেলে অশোক বিশ্বাস।

এদিকে মাছ লুটাপাটের ঘটনায় শুক্রবার ঘের ও জমির মালিকদের উদ্যোগে কুচলিয়া বিদ্যালয় মাঠে প্রতিবাদ সভা ডাকা হয়। সেখানে আরেক পক্ষ নিজেদের নামে ঘের দাবি করে পাল্টা সভা ডাকে। সেখানে অপ্রীতিকর ঘটনার আশংকার খবর পেয়ে মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান, সহকারি পুলিশ সুপার সোয়েব হোসেন ও থানার ওসি রফিকুল ইসলামসহ সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। আগামী ২ মার্চ সকাল ১০ টায় ঘেরের বৈধ কাগজপত্র নিয়ে উভয়পক্ষকে উপজেলা পরিষদ হল রুমে ডাকা হয়েছে।

ঘের মালিক বলরাম রায় জানান, ৪শ’৭২ জন জমি মালিকের কাছ থেকে জমি লীজ নিয়ে ১০ বছরের চুক্তিতে কেশবপুরের আব্দুস সামাদের সাথে তিনি অংশিদার ভিত্তিতে বিলবোকড়ে মাছের ঘের করেন। কিন্তু চুক্তি মোতাবেক গত ৭ বছর ঘেরে মাছের চাষ করে কোন ভাগ দেয়নি তাকে। বিষয়টি জমি মালিকরা জানতে পেরে আব্দুস সামাদের উপর ক্ষুব্ধ হন। এক পর্যায় গত বছর বাকী ৩ বছরের জন্য বলরাম রায়ের নামে ঘেরের চুক্তিনামা (ডিট) করে দেয় আব্দুস সামাদ। সে মোতাবেক জমি লীজের বকেয়া পাওনা বুঝে দেয়া হয়। আগামী মার্চ মাসের ৫ তারিখে চলতি বছরের লীজের টাকা দেয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু তার আগেই বৈদ্যনাথ, গোবিন্দ মল্লিক, আনিছ, মঞ্জুর হোসেন ও অশোক বিশ্বাসের নেতৃত্বে প্রায় ৪০ জন অস্ত্রধারি যুবক তাকেসহ কর্মচারীকে মারপিট করে নৌকাসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত দাবি করেছেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিপদ ভঞ্জন পাঁড়ে বলেন, তিনি ঘেরের জমি মালিকদের লীজের টাকার জামিনন্দার হন। ইতিমধ্যে বকেয়া পাওনা তার মাধ্যমে পরিশোধ করা হয়েছে। চলতি বছরের টাকা দেবার আগেই প্রভাবশালী মহলের ইন্ধনে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনিও সুষ্ঠ বিচার দাবি করেন।

রামপদ রায়, অনিমেষ মল্লিক, উজ্জ্বল বিশ্বাস, উপেন্দ্র নাথ রায়সহ একাধিক ঘেরের জমি মালিক জানান, তারা বলরামকে দেখেই জমি লীজ দিয়েছিলেন। ইতোমধ্যে বিগত বছরের বকেয়া টাকাও তারা বুঝে পেয়েছেন।

সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার সোয়েব হোসেন জানান, ওইখানে উত্তেজনা বিরাজ করায় ঘটনাস্থলে গিয়ে সেটি প্রশমন করা হয়েছে। আগামী ২ মার্চ উভয় পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে ডাকা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসানও একই মন্তব্য করেন।