দু’বছর পার হল টালীখোলার নয়ন চৌধুরী সাজু (১৮) হত্যাকান্ড। সন্তান হারানোর ক্ষত এতটুকুও কমছে না পরিবারে। তবে প্রধান অভিযুক্ত যশোর জেলা ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সাধারণ সম্পাদক ছালছাবিল আহমেদ জিসান ও তার সহযোগীদের আটকে পুলিশের আগ্রহ কমছে বলে অভিযোগ। খুনের সাথে জড়িত সংঘবদ্ধ চিহ্নিত চাঁদাবাজ চক্রকে দ্রুত আটক করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার আহবান এলাকাবাসীর। যদিও পুলিশের পক্ষে দাবি করা হয়েছে, পলাতক জিসান ও সহযোগীদের হন্যে হয়ে খোঁজা হচ্ছে।
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ১৩ মার্চ রাতে বিমান অফিস মোড়ে পুরাতনকসবা টালীখোলার স্বপন ওরফে চাইনিজ স্বপনের ছেলে নয়ন চৌধুরী সাজুর উপর হামলা চলে। হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে ও কিল ঘুষি লাথি মেরে থেতলে দেয়া হয় তাকে। ওই দিন রাত ১২ টায় গুরুতর অবস্থায় সাজুকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর ১৪ মার্চ সন্ধ্যা ৬ টায় মারা যায় সাজু। এ ঘটনায় ১৫ মার্চ নিহতের বড় ভাই জাতীয় যুব শ্রমিক লীগের যশোর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রতন চেীধুরী রাজু থানায় মামলা করেন। মামলা নাম্বার ২৯।
ওই মামলায় আসামি করা হয় পুরাতন কসবা মিশনপাড়ার হাফিজুর রহমান হাফিজের ছেলে জেলা ছাত্রলীগের বহিস্কৃত সম্পাদক ছালছাবিল আহমেদ জিসান, একই এলাকার ছোট্ট খোকনের ছেলে রাব্বি, খোকন আলীর ছেলে রনি ও শহরতলী হামিদপুরের খাইরুল ইসলামের ছেলে পাভেল।
এদিকে, সাজু হত্যায় ছাত্রলীগ নেতা জিসানসহ তার সহযোগীরা জড়িত অভিযোগে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশে তোলপাড় শুরু হয় ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমান্ডসহ বিভিন্ন স্তরে। তুমুল সমালোচনা ও আলোচনা হয়। আওয়ামী ঘরানা রীতিমত ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। জিসানের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দৃষ্টি আকর্ষণও করে। শেষমেষ তাদের ছাত্রলীগ থেকে বহিস্কার করা হয়। ছাত্রলীগ যথাযথ সিদ্ধান্ত গ্রহন করলেও পুলিশ তার কর্ম তৎপরতা প্রশ্নবিদ্ধ করে চলেছে বলে অভিযোগ। ঘটনার দুই বছর পার হলেও পলাতক জিসান, রনি, রাব্বি ও হামিদপুরের পাভেলকে আটক করতে পারেনি। ঘটনা পরপরই অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে এমন বক্তব্য ছুঁড়লেও এলাকাবাসীর দাবি, পুলিশ আন্তরিক নয়। যেকোনো মূল্যে জিসানকে ধরতে অতিরিক্ত সোর্স লাগিয়ে কৌশলী অভিযান পরিচালনার দাবি তাদের।
এদিকে, ছাত্রলীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, জিসান ও তার বিতর্কিত সহযোগীদের আটক করলে শুদ্ধি অভিযানের মত কাজ হবে। কেননা এই জিসান ও তার মত আরও কয়েক মুখোশ ধারীনেতা ছাত্রলীগকে রীতিমতো কলঙ্কিত করেছে। তারা সংগঠনের নাম ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি করেছে। তাদের দাবিকৃত চাঁদা না দিলে খুন পর্যন্ত করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই আব্দুস সালাম জানান, ছালছাবিল আহমেদ জিসানসহ অভিযুক্ত ৪ জনই এখন পলাতক। নানামুখি সোর্স লাগিয়ে তাদের খোঁজা হচ্ছে। পরিবার কিংবা এলাকাবাসীর হতাশা উৎকণ্ঠার কোনো কারণ নেই। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হবে।