অ্যাগুয়েরোর বিদায়ের ম্যাচে সিটির শিরোপা উদযাপন

দুই গোলের মাধ্যমে ম্যানচেস্টার সিটিকে বিদায় জানিয়েছেন সার্জিও অ্যাগুয়েরো। তার এই দুই গোলে আগেই প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা নিশ্চিত হওয়া ম্যানচেস্টার সিটি রোববার লিগের শেষ ম্যাচে এভারটনকে ৫-০ গোলে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপা উৎসব করেছে। ইতিহাদের ক্যারিয়ারে আর্জেন্টাইন তারকার এটি পঞ্চম লিগ শিরোপা।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের পর সিটির সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা ইংলিশ চ্যাম্পিয়নদের বিদায় জানাচ্ছেন। ম্যাচ শেষের ২৫ মিনিট আগে বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে এসে অ্যাগুয়েরো দুই গোল করেছেন। এর আগে কেভিন ডি ব্রুইনা, গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও ফিল ফোডেনের গোলে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিল পেপ গার্দিওলার দল।

পোর্তোর মাঠে আরেক ইংলিশ জায়ান্ট চেলসির বিপক্ষে আগামী ২৯ মে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের আগে কোন ধরনের ঘাটতি রাখতে চায়নি সিটিজেনরা।

ম্যাচ শেষে স্কাই স্পোর্টসকে অ্যাগুয়েরো বলেছেন, এখানে আমি যখন এসেছিলাম তখন প্রথম শিরোপাটা ক্লাব ও একই সঙ্গে আমার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এরপর ম্যান সিটির শিরেপো জয় অনেকটা অভ্যাসে পরিনত হয়। আমি দারুন খুশী, কারণ একটি ক্লাবের দীর্ঘ ১০ বছর কাটানো মোটেই সহজ কাজ নয়। আমার জন্য এটা অনেক বেশী সম্মান ও গৌরবের।

তিনি আরো বলেন, এই ম্যাচটির আগে আমার কেমন যেন অবাক লাগছিল। খুব একটি স্বস্তি বোধ করছিলাম না। ঐ সময় আমি শুধুমাত্র ভাল মুহূর্তগুলোর কথা চিন্তা করেছি। আশা করছি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে নিজেকে শেষবারের মত প্রমাণ করতে পারবো।

ম্যানেজার পেপ গার্দিওলা শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে অনেকটাই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। ম্যাচ শেষে তিনি স্বীকার করেছেন অ্যাগুয়েরো তাদের সবার কাছে একজন বিশেষ ব্যক্তি ছিলেন। শিরোপা উৎসবের আনন্দ সমর্থকদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে গিয়ে সিটি বস বলেছেন, সে আমাকে দারুণভাবে সহযোগিতা করেছে।

গার্দিওলা যোগ করেন, তার কোন বদলী কখনই হবে না। এই ক্লাবে অনেক খেলোয়াড়ই খেলেছে, জো হার্ট, ডেভিড সিলভার মত খেলোয়াড়রাও ক্লাবটিকে অনেকদুর এগিয়ে নিয়ে গেছেন। সবার মধ্যে অ্যাগুয়েরো সত্যিই ভিন্ন একমাত্রা যোগ করেছেন।

করোনাভাইরাসের কারণে বিভিন্ন বিধিনিষেধের পর দীর্ঘ ১৪ মাস পর কাল মাঠে সমর্থকরা প্রবেশের অনুমতি পেয়েছিলেন। একদিকে শিরোপার আনন্দ, অন্যদিকে প্রিয় তারকাকে বিদায়, সব মিলিয়ে ইতিহাদের পরিবেশ ছিল মিশ্রতায় পরিপূর্ণ। এই পরিবেশের মধ্যে এভারটনও নিজেদের সামলে উঠতে পারেনি। ম্যাচের আগে সিটির দলীয় বাসকে স্বাগত জানিয়েছে হাজারো সমর্থক।

কাল ইতিহাদ স্টেডিয়ামে প্রবেশের অনুমতি পেয়েছিলেন মাত্র ১০ হাজার সমর্থক। কিন্তু মাঠ ও মাঠের বাইরে এক উৎসবমুখর পরিবেশে অ্যাগুয়েরোকে বিদায় জানিয়েছেন সমর্থকরা। সিটি তারকাকে বিদায় জানাতে এভারটনের খেলোয়াড়রা গার্ড অব অনারের ব্যবস্থা করেন। এসময় অবশ্য সিটির খেলোয়াড়রাও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়।

সাম্প্রতিক সময় ইনজুরির কারণে পুরো ৯০ মিনিট খেলার জন্য ফিট ছিলেন না অ্যাগুয়েরো। প্রিয় তারকাকে ছাড়াই অবশ্য সিটি প্রাথমিক কাজটুকু সেড়ে রেখেছিল। ৭১ মিনিটে আর্জেন্টাইন তারকার প্রথম গোলে ব্যবধান বেড়ে দাঁড়ায় ৪-০।

ফার্নান্দিনহোর ক্রস থেকে ৭৬ মিনিটে এভারটনস গোলরক্ষক জর্ডান পিকফোর্ডকে হেডের সাহায্যে পরাস্ত করে নিজের দ্বিতীয় ও দলের হয়ে পঞ্চম গোলটি করেন অ্যাগুয়েরো। শেষ মুহূর্তে হ্যাটট্রিকের সুযোগও পেয়েছিলেন এই তারকা। কিন্তু এবার তার হেড সরাসরি পিকফোর্ডের হাতে ধরা পড়ে।