বেড়িয়ে এলো টিকটক হৃদয়ের আসল পরিচয়

গত কয়েকদিন ধরে ভারতে ধারণ করা একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায় বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলার এক তরুণীকে ভারতের কেরালা রাজ্যে নিয়ে যৌন নির্যাতন করছে কয়েকজন তরুণ। এ ঘটনায় বাংলাদেশেরই রিফাতুল ইসলাম হৃদয় (২৬) নামে এক যুবক জড়িত বলে সত্যতা পায় পুলিশ।

এ ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ভারতের বেঙ্গালুরু পুলিশ। এর আগে ওই ঘটনায় ওই পাঁচজনের ছবি দিয়ে তাদের সম্পর্কে তথ্য চেয়ে পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছিল আসাম পুলিশ। তাদের মধ্যে গতকাল ভোর রাতে পালাতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছে হৃদয়সহ দুজন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই তরুণীকে বাংলাদেশ থেকে অবৈধ পথে ভারতে পাচার করে যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেওয়া হয়। এর আগে ঢাকার মগবাজারের রিফাদুল ইসলাম হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় ওই তরুণীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টিকটক হৃদয়ের বাবার নাম আবুল হোসেন। নয়াটোলা (বউবাজার) এলাকায় একসময় মা-বাবার সঙ্গেই থাকত। স্থানীয় লোকজন তাকে বরাবর বখাটে হিসেবেই চেনে। সে ভারতে যাওয়ার আগে একটি গ্রুপ নিয়ে হাতিরঝিল এলাকায় টিকটক করে বেড়াত। এক প্রতিবেশী জানান, হৃদয় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। এই বখাটে মেয়েদের রাস্তায় উত্ত্যক্ত করত। কোনো কাজ না করায় মা তাকে চার মাস আগে বাড়ি থেকে বের করে দেন। দেশে থাকা অবস্থায় তার বিরুদ্ধে ২০১৪ সালে রমনা থানায় ডাকাতি প্রস্তুতির একটি মামলা হয়েছিল।

হৃদয়ের চাচা বাবুল মিয়া বলেন, ‘বখাটে হওয়ায় হৃদয়কে বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। অনেক দিন ধরেই আমরা ওর খোঁজ পাচ্ছিলাম না। পরবর্তী সময়ে জানতে পারি যে সে ইন্ডিয়ায় রয়েছে।’

ওই ঘটনায় ঢাকার হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেছেন নির্যাতনের শিকার মেয়েটির বাবা। মামলায় আসামি করা হয় হৃদয় ও অজ্ঞাতনামা আরো চারজনকে। মামলার এজাহারে বলা হয়, ‘প্রায় এক বছর আগে আমার মেয়েকে অপহরণ করে বিদেশে পাচার করে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। সেই নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

হাতিরঝিল থানার ওসি আব্দুর রশীদ বলেন, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যম থেকে আমরা জানতে পেরেছি যে এই মামলার আসামি হৃদয়সহ কয়েকজনকে ভারতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, টিকটক হৃদয়ের সঙ্গে ওই নারীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়। হৃদয় তাঁকে ভালো বেতনে চাকরিসহ বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে পাচার করে যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেয়।