মঙ্গলে পানি নয়, বইছে অন্য তরল!

পানিই জীবন, পানিতেই প্রাণ। পৃথিবীর বাইরে বাসযোগ্য গ্রহ খুঁজে বের করার পক্ষে এই একটাই শর্ত।

সৌরজগতের এতগুলো গ্রহের মধ্যে তার বিন্দুমাত্র ইঙ্গিত কোথাও পাওয়া গেলেই আনন্দের সীমা থাকে না আমাদের। আর প্রতিবেশী গ্রহ মঙ্গলে যদি সেই ছিটেফোঁটাও পাওয়া যায়, তাহলে তো কথাই নেই।

মঙ্গলকে ঘিরে বাড়বেই উৎসাহ, অনুসন্ধান। আর সেই উৎসাহী, অনুসন্ধিত্সু মনই আরো বেশি করে লাল গ্রহে পানির উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখছে, পানি নয়—এ তো অন্য কোনো তরলের স্রোত।

অন্তত রাডার সিগন্যাল তো তেমনই বলছে। মঙ্গলের দক্ষিণ মেরুতে ভূগর্ভে স্রোতপ্রবাহের ইঙ্গিত পেয়েছিল বিজ্ঞানীদের একাংশ। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির বিশেষ যন্ত্রের পর্যবেক্ষণে ধরা পড়েছিল, লাল গ্রহের অভ্যন্তরে রয়েছে পানির স্রোত।

মনে করা হচ্ছিল, তা কোনো হ্রদের অংশ কি না। সেই পানিতে প্রাণধারণ আদৌ সম্ভব কি না, তা নিয়ে শুরু হয়েছিল বিস্তর গুঞ্জন-জল্পনা। কিন্তু সম্প্রতি সেই পর্যবেক্ষণ কিংবা ইঙ্গিত বদলে যাচ্ছে আরেক দল বিজ্ঞানীর দাবিতে। এ নিয়ে তিন পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে বিখ্যাত সাময়িকীতে।

তার পর থেকেই ভিন্নতর জল্পনা উসকে উঠেছে। বলা হচ্ছে, যদিও বা পানির কোনো উৎস থেকে থাকে, তাহলে তা মঙ্গলের মাটির অনেকটা ভেতরে এবং তা মাটি চুইয়ে আসা তরল। অত্যধিক শীতল তাপমাত্রায় এখানকার হ্রদ শুকিয়ে কাঠ হয়েছে।

লাল গ্রহ নিয়ে যখন এমনই আশা-আকাঙ্ক্ষার দোলাচল, সে সময় নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরিতে বসে রাডারে ধরা পড়া সিগন্যাল পরীক্ষায় মগ্ন ছিলেন দুই বিজ্ঞানী আদিত্য আর খুল্লার ও জেফ্রি জে প্লট।

৪৪ হাজার প্রতিধ্বনি (Echo) চুলচেরা বিশ্লেষণ করে তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, এগুলো সবই মঙ্গলপৃষ্ঠের ভেতরের দিকের। আর সেই অংশ এতটাই শীতল যে তরল আকারে পানি থাকা বস্তুত অসম্ভব। মঙ্গলের অন্তর্ভাগের তাপমাত্রা মাইনাস ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সূত্র : সংবাদ প্রতিদিন।