চাঁদাবাজি-ভোগান্তি কমলে পণ্যের দামও কমবে: বাণিজ্যমন্ত্রী

পণ্যের সরবরাহ, চাঁদাবাজিসহ পথে পথে ভোগান্তি কমলে পণ্যের দাম কমবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, ঢাকা শহরে পণ্যের সরবরাহ চেইন ঠিক রাখা দরকার।

চাঁদাবাজি কমাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে, তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন এবিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন।

সোমবার ৪ এপ্রিল সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির প্রথম সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এস এম শফিকুজ্জামানসহ ব্যবসায়ীরা নেতারা।

টিপু মুনশি বলেন, দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত টাস্কফোর্স কমিটির প্রথম সভা আজকে হলো। সরবরাহ চেইন ঠিক রাখতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

চাঁদাবাজির কারণে পণ্যের দাম বাড়ে সে বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, কিছুক্ষণ আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে।

পথে পথে কোথাও কোনো সমস্যা হলে ব্যবস্থা নেবেন। আলোচনায় এটাও এসেছে কারা কারা করছে। এখানে একটা সংস্থা বা একটা গ্রুপ নয় বিভিন্ন গ্রুপ বিভিন্ন স্থানে করছে।

এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা সচেতন আছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও কথা দিয়েছেন ব্যবস্থা নেবেন। যাতে ব্যবসায়ীরা কোথাও এ ধরনের চাঁদাবাজির খপ্পরে না পড়ে।

অতিরিক্ত মুনাফার বিষয়টি কীভাবে সমাধান করবেন জানতে চাইলে টিপু মুনশি বলেন, এটা কোনো সহজ বিষয় নয়। এক্ষেত্রে উৎপাদন খরচ থেকে শুরু করে পরিবহন খরচ, পণ্যের লসসহ অন্যান্য খরচ হিসাব করে খুচরা বাজারে পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়।

এখন একজন শাক বিক্রেতা যদি প্রতিদিন ৫০০ টাকা রোজগার না করে তাহলে সে চলবে কি করে। কারণ বর্তমানে একজন লেবারের মজুরি ৫০০ টাকা। এখন শাক বিক্রেতা যদি প্রতিদিন ৫০ আঁটি শাক বিক্রি করে সেখান থেকে সে ৫০০ টাকা আয় করতে চায়।

এটাকে চিহ্নিত করতে হলে সরবরাহ বাড়িয়ে দিতে হবে। শাক সবজির বিষয়টি আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না। এসব বিষয় থাকবে। এর একমাত্র উপায় হলো, সরবরাহ যদি যথেষ্ট করা যায় এবং পথে পথে যদি ভোগান্তিটা কমানো যায় তাহলে সব কিছুর দাম কিছুটা হলেও কমবে।

তিনি বলেন, স্থান ভেদে পণ্যের দাম হয়। ঢাকা শহরের দাম দিয়ে কিন্তু সারাদেশের দাম নির্ণয় করা যায় না। ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে দুই কোটি মানুষ ঢাকায় আছি।

রংপুরের বাজারে ১০ টাকা বেগুন ঢাকাতে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকায়। এজন্য ঢাকা শহরের সরবরাহটা বাড়ানো দরকার। সেখানে বাধা বিপত্তি অতিক্রম করা দরকার।

তাই কৃষিপণ্যের ক্ষেত্রের মুনাফা নির্ধারণ করা খুব কঠিন। এজন্য সরবরাহ চেইন ঠিক রাখতে হবে।নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য রেলে পরিবহন করা যায় কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু বলেন, এবিষয়ে আমাদের রেলমন্ত্রী চেষ্টা করছেন।

এটা ঠিক যদি রেলে পণ্য আনতে পারি তাহলে সুবিধা হবে পরিবহন খরচের ওপর একটা প্রভাব পড়বে। পাশাপাশি পথে পথে চাঁদাবাজি থেকে আমরা বাঁচতে পারবো।

এটা ঠিক হঠাৎ করে রেলের ব্যবস্থা করাও মুশকিল। আমরা যোগাযোগ করে বলতে পারি যাতে কিছু ডেডিকেটেড রেল রাখা হয় বগুড়া, রংপুর পঞ্চগড় থেকে পণ্য সরবরাহে ক্ষেত্রে।

১৭টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে চিনি ও তেলের দাম নির্ধারণ করা হয়, অন্য পণ্যগুলোর দাম নির্ধারণ করা যায় কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা মূলত মেজর আইটেম নিয়ে চিন্তা করি। এর বাইরের পণ্যগুলো তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। আমরা মূলত আমদানি করা পণ্যগুলোকেই জোড় দিয়ে থাকি।

এজন্য আমরা টিসিবিকে স্থায়ীভাবে শক্তিশালী করতে চাই। ৩০ শতাংশ আমাদের হাতে আছে রমজানের বাজারের। প্রধানমন্ত্রীও চায় টিসিবিকে শক্তিশালী করতে। কখনো যেন মানুষ কষ্টে না পড়ে। আমরা যেন মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি আমাদের প্রোগ্রাম নিয়ে।

এবার আমাদের শক্তির পরীক্ষা হয়েছে। এক কোটি পরিবারকে টিসিবির মাধ্যমে সহায়তা করা হচ্ছে। এটা কঠিন কাজ ছিল সবার সহযোগিতায় এটা সম্ভব হয়েছে। এ শক্তি আমরা সঞ্চয় করলাম। আগামীতে এই শক্তি দিয়ে কাজ করবো এবং বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবো।