আমার লক্ষ্য একটাই, মোশাররফ করিম

মোশাররফ করিম বলেন, ‘আমি কখনো হিসাব করে চলি না। দর্শক আমাকে ভালোবাসেন এটাই আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া। কবে কোথায় কী করেছি এসব মনে রাখতে চাই না। আমার লক্ষ্য একটাই, তা হলো দর্শকের মনে প্রশান্তি তৈরি করা। সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।’

শিক্ষাজীবনে উচ্চমাধ্যমিকের পর লেখাপড়া ও নাট্যচর্চা দুটিই সমানতালে চালিয়ে যেতে থাকেন মোশাররফ করিম। গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু করেন শিক্ষকতা। কিন্তু স্বপ্ন যার অভিনেতা হওয়া, তিনি কী আর চার দেওয়ালের মাঝে বন্দি থাকতে পারেন? ১৯৯৯ সালেই সেই মাহেন্দ্রক্ষণ চলে আসে তার জীবনে।

ফেরদৌস হাসানের পরিচালনায় ‘অতিথি’ নামের একটি একখণ্ডের নাটকে অভিনয় করেন তিনি। চ্যানেল আইতে নাটকটি প্রচার হওয়ার পর তার অভিনয় বেশ প্রশংসিত হয়। এরপর কেটে যায় আরও কয়েক বছর।

সফলতা তার জীবনে ধরা দেয় ২০০৪ সালে। সে বছর ‘ক্যারম’ নামের একটি খণ্ডনাটকে অভিনয় করেন মোশাররফ করিম। এ নাটকে তার বিপরীতে অভিনয় করেন নুসরাত ইমরোজ তিশা। নাটকটি প্রচার হওয়ার পর থেকে তার পরিচিতি বাড়তে থাকে হু হু করে! এরপর থেকে একখণ্ড ও ধারাবাহিক নাটকে নিয়মিত অভিনয় শুরু করেন তিনি।

‘৪২০’ হলো তার অভিনীত প্রথম মেগা ধারাবাহিক নাটক। পরে ‘ভবের হাট’, ‘ঘর-কুটুম’, ‘জিম্মি’, ‘দুই রুস্তম’, ‘আন্তঃনগর, কিংকর্তব্যবিমূঢ়, ‘আউট অব নেটওয়ার্ক’, ‘সাদা গোলাপ’, জুয়া’, ‘সুখের অসুখ, ‘সিরিয়াস কথার পরের কথা’, ‘সন্ধান চাই’, ‘ঠুয়া’, ‘লস’, ‘সিটি লাইফ’, ‘বিহাইন্ড দ্য সিন’, ‘তালা’, ‘শূন্য পিক পকেট’, ‘ফাউল’, ‘জাঁতাকল’সহ অসংখ্য নাটক ও টেলিফিল্মে অভিনয় করে দর্শকের মনের অন্দরে জায়গা করে নেন মোশাররফ করিম। শুধু সহজাত অভিনয়গুণে তিনি হয়ে ওঠেন দর্শকের পছন্দের অভিনেতা।

দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে মিডিয়ায় সমান জনপ্রিয়তা নিয়ে টিকে থাকা একজন সফল অভিনেতা মোশাররফ করিম এখনো জনপ্রিয়তার শীর্ষে থেকেই অভিনয় করে যাচ্ছেন। নাটক, ওয়েব সিরিজ, সিনেমায় তার অভিনয় দ্যুতি দেখছেন দর্শক। নাটকের গণ্ডি পেরিয়ে সিনেমায়ও নিজের জাত চিনিয়েছেন মোশাররফ। সিনেমার শুরুটা হয়েছিল তৌকীর আহমেদের ‘জয়যাত্রা’ দিয়ে। যদিও সেখানে তার উপস্থিতি দীর্ঘ ছিল না।

এরপর ‘দারুচিনি দ্বীপ’, ‘রূপকথার গল্প’, ‘থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বার’, ‘প্রজাপতি’, ‘টেলিভিশন’সহ আরও কিছু সিনেমায় অভিনয় করেন। অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজক হিসাবেও রয়েছে তার কাজের অভিজ্ঞতা। তার প্রযোজনা সংস্থা থেকে এখন পর্যন্ত বেশ কিছু একখণ্ড ও ধারাবাহিক নাটক নির্মিত হয়েছে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে যে বিষয়টি এখন আলোচনার বিষয়, আর তা হচ্ছে তার অভিনীত নাটক। একখণ্ড ও ধারাবাহিক মিলিয়ে তার অভিনীত নাটকের সংখ্যা প্রায় এক হাজারের কাছাকাছি। একজন অভিনেতা হিসাবে অবশ্যই এটি একটি রেকর্ড।

এ প্রসঙ্গে মোশাররফ করিম বলেন, ‘আমি কখনো হিসাব করে চলি না। দর্শক আমাকে ভালোবাসেন এটাই আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া। কবে কোথায় কী করেছি এসব মনে রাখতে চাই না। আমার লক্ষ্য একটাই, তা হলো দর্শকের মনে প্রশান্তি তৈরি করা। সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।’

শুধু দেশে নয়, বিদেশেও রয়েছে তার দারুণ জনপ্রিয়তা। কিছুদিন আগে ‘ডিকশনারি’ নামের ভারতের কলকাতার একটি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন। মুক্তির পর সেটি নিয়েও দর্শকের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।