যশোর নওয়াপাড়া নৌবন্দরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু 

jessore map

 

যশোরের অভয়নগরে নওয়াপাড়া নৌবন্দরের ভৈরব নদে অবৈধ উচ্ছেদের অভিযান শুরু হয়েছে। গত দু’দিনের অভিযানে উপজেলার তালতলা ঘাট এলাকা থেকে শুরু করে ভৈরব সেতু পর্যন্ত ১৫টি অধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে।

জানা যায়, ২০০৪ সালে নওয়াপাড়াকে নদী বন্দরের সীমানা উল্লেখপূর্বক গেজেট প্রকাশ করে সরকার। আর তারপরই চোখের পলকে যেন বদলে যেতে থাকে নওয়াপাড়ার চিত্র। ব্যবসা বাণিজ্যের বড় মোকাম হওয়ায় প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় করছে সরকার। অথচ অধিক মুনাফালোভী কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নদীর জায়গা দখল করছে। এতে একদিকে নাব্যতা সংকট ও অন্যদিকে দখলের কবলে প্রতিনিয়ত তার জৌলুস হারাচ্ছে নওয়াপাড়া নদী বন্দর। নদীর পাড়ে গোডাউন,কারখানাসহ বিভিন্ন স্থাপনার দখলে ক্ষীণ হয়ে যাচ্ছে এই নদী। ফলে সরকার হারাতে বসেছে হাজার কোটি টাকার রাজস্ব। এদিকে বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়ার ফলে নদীর নাব্যতা আগের মত ফিরে আসবে।এতে করে আমাদের ব্যবসা বানিজ্যের উন্নতি ঘটবে।

নওয়াপাড়া নদীবন্দর অফিসসূত্রে জানা যায়, এই নৌবন্দরের আওতাধীন ১৬০ টির মধ্যে প্রায় ৬০টির মত ঘাট অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন সময় অবৈধ স্থাপনা তৈরীকারীদের নোটিশ দেওয়া হলেও কর্ণপাত করেনি কেউ।

এদিকে স্থানীয় সচেতন মহল, ব্যবসায়ীমহল, সুধিজনেরা একের পর এক আন্দোলন সংগ্রাম করলেও বদলায়নি অতিলোভী গুটি কয়েক ব্যবসায়ীর মনোভাব। তারা বলছেন, ভৈরব নদের অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়ার ফলে নদী আগের রুপে ফিরে আসবে। । তাছাড়া বিআইডব্লিউটিএ নদী খননের যে ধীরগতি এটা যেন দ্রুত সমাধান হয়।তবে দেরিতে হলেও উচ্ছেদ অভিযান হচ্ছে এটাই খুশি বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা।

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কাশেম গোলদার বলেন, নদী বাচলে অভয়নগরে ব্যবসা থাকবে।তাই এই উচ্ছেদ অভিযানে আমরা খুশি হলেও পরবর্তীতে আবার যাতে অবৈধভাবে দখল না করে সেদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নজর রাখা উচিত। নওয়াপাড়া নদী বন্দরের উপ-পরিচালক মাসুদ পারভেজ জানান,নওয়াপাড়া নদী বন্দরের আওতাধীন ভৈরব নদের দুই পাড়ে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখন থেকে সবসময় নজর রাখবো যাতে কেউ অবৈধ স্থাপনা তৈরি করতে না পারে।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শোভন রাংসা জানান, কতিপয় অসাধু ব্যক্তি অভয়নগরের নওয়াপাড়ায় ভৈরব নদ দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করেছে। ফলে নদের পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়ে নাব্যতা হ্রাস পাচ্ছে। সব দিক বিবেচনা করে অভিযানের প্রথম দিনে ১০টির অধিক স্থাপনা ভাঙা হয়েছে। এছাড়া নদীর মধ্যে মাটি ভরাট করে নির্মাণ করা অবৈধ জেটি (লংবুম ব্যবহারের জন্য) অপসারণের কাজও চলছে। নদী বাঁচাতে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

অভিযানের সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ ফরিদ জাহাঙ্গীর, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) তানজিলা আক্তার,অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি )একেএম শামীম হাসান সহ নওয়াপাড়া নৌপুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।