যশোরে ঐতিহাসিক জনসভাকে পুঁজি করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

যশোরে ঐতিহাসিক জনসভাকে পুঁজি করে কতিপয় যুবকেরা কৌশল নিয়ে জনসভায় আগত বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মী সমর্থক ও অফিসগামী নারী পুরুষদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত যুবকেরা নিজেদের ছাত্রলীগের নাম করে বৃহস্পতিবার ২৪ নভেম্বর সকাল ৬ টা থেকে প্রধান মন্ত্রীর ভাষন শুরুর পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত যশোর শহরের বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে কোটপিন পরিয়ে টাকা আদায় করেছে। ফলে মোটর সাইকেল,রিকশা যাত্রী নারী পুরুষেরা তাদের পরিবার নিয়ে এক পর্যায় বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে।

প্রত্যদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার ২৪ নভেম্বর সকাল ৬ টা থেকে যশোর শহরের মুজিব সড়ক,প্রাণ কেন্দ্র দড়াটানা এলাকা,যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সামনে জেল রোড,গরীব শাহ সড়ক,আরবপুর,কারবালা,বিমানবন্দর,পালবাড়ী,খাজুরা বাসস্ট্যান্ড, চাঁচড়া মোড়,বেনাপোল সড়ক,রেলগেট,খড়কী, বিমানবন্দর সড়ক,পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের দক্ষিণ পাশের সড়ক,গাড়ীখানা,আরএনরোড,চৌরাস্তা,রেল রোড,ভোলাট্যাংক রোড,এমকে রোডসহ যশোর শহরের প্রায় ২০ সড়কে আগত ঐতিহাসিক জনসভায় আগত নেতা,কর্মী,সমর্থক,মুক্তিযোদ্ধা ও বিভিন্ন পেশার নারী পুরুষদের টার্গেট নিয়ে তাদের দাঁড় করিয়ে জামা কাপড়ের উপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি,বাংলাদেশের পতাকা,নৌকা প্রতীকের পিনকোট লাগিয়ে দিয়ে নিজেদের ছাত্রলীগের কর্মী দাবি করে সম্মান দাবি করে টাকা চান। অপ্রস্তুুত নারী পুরুষেরা পড়েন বিপাকে। যদিও মান সম্মানের কারনে পকেটে হাত দিয়ে ১০/২০টাকা বের করলে ৫০ থেকে ২শ’ টাকা দাবি করে। তাদের দাবি পূরনে ব্যর্থ হলে কাপড়ে লাগানো পিনকোট খুলে নিয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বেলা ১০ টা বেজে ৪৫ মিনিটের সময় শহরের সদর হাসপাতালের সামনে এক রিকশায় এক ছোট সন্তান নিয়ে এক পরিবার দড়াটানার দিকে যাওয়ার সময় এক যুবক নিজেকে ছাত্রলীগের কর্মী দাবি করে চলন্ত রিকশা কৌশলে থামিয়ে রিকশায় থাকা শিশুর পরনের জামায়,তার বাবার শার্টে ও মায়ের বোরকায় পিনকোট লাগিয়ে সম্মান দেখানোর কথা বলে টাকা দাবি করে। উক্ত ব্যক্তির কাছে থাকা কোন রকম ১০ থেকে ২০ টাকা বের করে দিলে উক্ত যুবক লাগানো পিনকোট খুলে নেয়। বিষয়টি প্রতিবেদক উপশহর এলাকার এক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আওয়ামীলীগ কর্মীকে বিষয়টি জানালে তিনি উক্ত যুবককে ডেকে কোথায় বাড়ি জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রথমে যুবক নিজের বাড়ি যশোর জেলায় বলে জানান। জেলার কোন উপজেলায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে বলেন কেশবপুর উপজেলায়।

বেলা সোয়া ১১ টার সময় এক ভদ্র মহিলা রিকশা যোগে সেন্ট্রাল রোড হয়ে রিকশা নিয়ে দড়াটানার দিকে যাওয়ার সময় আরেক যুবক উক্ত ভদ্র মহিলার রিকশা থামিয়ে নিজেদের ছাত্রলীগের পরিচয় দিয়ে পিনকোট পরিয়ে টাকা দাবি করেন। উক্ত মহিলা ২০ টাকা দিতে চাইলে যুবক না নিয়ে পিন কোট খুলে নেয়। ঐতিহাসিক জনসভায় আগত মুক্তিযোদ্ধা থেকে শুরু করে সব শ্রেনীর মানুষদের পরনের গেঞ্জি,শার্ট,কোর্টসহ পোশাকে কোটপিন কৌশল নিয়ে লাগিয়ে সম্মান দাবি করেন। যারা টাকা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন তাদের লাগানো পিনকোট খুলে নিচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে,বৃহস্পতিবার পিনকোট বিক্রি করে ২০ জনের অধিক যুবকেরা প্রায় ৫০ হাজারের অধিক টাকা আদায় করেছেন।

উপশহর এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুজন নিশ্চিত করে বলেন,এই সব যুবকেরা ছাত্রলীগের কেউ নন। এরা বিএনপি’র আমলসহ যে সব দল জনসভা করেন। তারা খোঁজ খবর নিয়ে দলের সপক্ষে পিনকোটের অর্ডার দিয়ে মোটা অংকের অর্ত উপার্জনে যেখানে জনসভা হয় সেখানে চলে গিয়ে কৌশল নিয়ে বিক্রি করে থাকেন। আবার জনসভা শেষ হওয়ার আগেই তারা জন সভাস্থল ত্যাগ করে চলে যান। এদের ব্যাপারে সর্তক থাকার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা দাবি করেছেন।#