যশোরে স্ত্রী ও দুই মেয়ে হত্যা মামলায় চার্জশিট

যশোর অভয়নগরের বহুলালোচিত স্ত্রী ও দুই মেয়ে হত্যা মামলায় ঘাতক জহিরুল ইসলাম বাবুকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গোলাম হোসেন। অভিযুক্ত জহিরুল ইসলাম বাবু যশোর সদরের জগন্নাথপুর গ্রামের বিশ্বাসপাড়ার মশিউর রহমান বিশ্বাসের ছেলে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৫ জুলাই দুপুরে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে অভয়নগরের সিদ্দিপাশা গ্রামের শ্বশুরবাড়ি থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে আসছিলেন জহিরুল ইসলাম বাবু। চাপাতলা গ্রামে আব্দুস সবুরের বাড়ির পিছনে জনৈক নুর ইসলামেল কলাবাগান ও ঘাসের জমিতে নিয়ে স্ত্রী বিথী ও বড় মেয়ে সুমাইয়া খাতুন এবং শেষে ছোট মেয়ে সাফিয়া খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে বাবু। লাশ তিনটি সেখানে ফেলে বাবু বাড়িতে এসে পরিবারের লোকজনকে ঘটনা জানান। এসময় তার বড়ভাই মঞ্জুরুল ইসলাম বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ বাড়িতে গেলে বাবু পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে। এ ঘটনায় নিহত বিথীর পিতা শেখ মুজিবর রহমান বাদী হয়ে জামাই জহিরুল ইষলাম বাবুকে আসামি করে অভয়নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, জহিরুল ইসলাম বাবু পেশায় একজন রড মিস্ত্রী ও মাদকাশক্ত। সে অভয়নগরের সিদ্দিপাশা গ্রামের শেখ মুজিবর রহমানের মেয়ে সাবিনা ইয়াসমিন বিথীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে বিথীর সাথে পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহ চলছিল তার। বিথী তার পিতার বাড়িতে থাকতে পছন্দ করত। আড়াই মাস আগে বিথী তার দুই মেয়ে নিয়ে পিতার বাড়ি চলে যায়। অনিচ্ছা সত্তেও জহিরুল মাঝে মধ্যে তার শ্বশুর বাড়ি যেয়ে থাকতো। এনিয়ে সংসারে চরম অশান্তি চলছিল। ১৫ জুলাই দুপুরে শ্বশুর বাড়ি থেকে জহিরুল তার স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে বাড়ির উদ্দ্যেশে রওনা হয়। পথে বিথীর সাথে জহিরুলের পারিবারিক বিষয়টি বাকবিতন্ড হয়। এক পর্যায়ে চাপাতাল গ্রামে রাস্তার পাশে জনৈক নুর ইসলামের কলা বাগান ও ঘাসের জমিতে নিয়ে স্ত্রী বিথী ও বড় মেয়ের সুমাইয়া আক্তার এবং ছোট মেয়ে সাফিয়া আক্তারের গলা চেপে স্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ ফেলে বাড়ি চলে যায়। পুলিশ সংবাদ পেয়ে তাকে বাড়ি থেকে আটক করে। আটক জহিরুলকে আদালতে সোপর্দ করা হলে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেয়। আসামি দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে হত্যার সাথে জড়িত থাকায় আসামি জহিরুলকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।#