যশোরে বারি বিটি বেগুনের মাঠ দিবস

বিটি বেগুন সম্পর্কিত এক মত বিনিময় সভা ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। গতকাল বুধবার যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে (বারি) যশোরের উদ্যোগে এক মাঠ দিবস অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল এর নির্বাহী পরিচালক ড. শেখ মোঃ বখতিয়ার।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, বিটি বেগুন আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে উৎপাদন হচ্ছে। বিটি বেগুনে ফল ও ডগা ছিদ্র পোকার আক্রমণ হয় না। ২০১৪ সাল থেকে দেশে ৬৫ যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে (বারি) যশোরের উদ্যোগে এক মাঠ দিবস অনুষ্ঠানে কৃষক বিটি বেগুন চাষের প্রতি ঝুকে পড়েছে। দেশে ২০ ভাগ সবজি চাষের জমিতে বর্তমান বিটি বেগুন চাষ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে সবজির মধ্যে বেগুন একট প্রিয় সবজি। বিটি বেগুনের পাতায় পোকা দমনের জন্য ইতিমধ্যে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।
প্রতিনিধিদল ফিড দ্য ফিউচার ইন্সেক্ট রেজিস্ট্যান্ট এগপ্ল্যান্ট পার্টনারশিপ প্রকল্পের পার্টনার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বারি) কর্তৃক বিটি বেগুনের বীজ উৎপাদন প্রক্রিয়া ও মাঠ পরিদর্শন করেন । বিটি বেগুন বাংলাদেশী কৃষকদের মধ্যে ব্যাপকভাবে গৃহীত হয়েছে,। বেগুনের এই জাতগুলো ক্ষতিকারক কীটনাশকের ব্যবহার যেমন কমায় তেমনি ভালো ফলন দেয়। উৎপাদন খরচ কম ও ভালো ফলন হওয়ায় এর থেকে কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল ইউনিভার্সিটি’র কলেজ অফ এগ্রিকালচার অ্যান্ড লাইফ সায়েন্সেস এর গ্লোবাল ডেভেলপমেন্টের রিসার্চ প্রফেসর এবং ফিড দ্য ফিউচার ইন্সেক্ট রেজিস্ট্যান্ট এগপ্ল্যান্ট পার্টনারশিপ প্রকল্পের পরিচালক ম্যারিসেলিস অ্যাসেভেদো বলেছেন, বিটি বেগুন কৃষকদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে সাহায্য করে কারণ কম কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় এবং এটি পরিবেশ রক্ষায় অবদান রাখছে । ফলন ভালো হওয়ায় অধিক অ্যায়ের সুযোগ তৈরি হচ্ছে”।
তিনি আরও বলেন, “এই জীব প্রযুক্তি বাংলাদেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার জন্য একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে ।“
বেগুনের নতুন ও স্থানীয়ভাবে অভিযোজিত জাত উদ্ভাবনের জন্য ফিড দ্য ফিউচার প্রকল্পটি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) এবং ফিলিপাইনের বিজ্ঞানীদের সাথে যৌথভাবে কাজ করছে । বীজ পেয়ে চলতি মৌসুমে বিটি বেগুন চাষ শুরু করেন কৃষক হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, বিটি বেগুন চাষ করলে ক্ষেতে ক্ষতিকারক কীটনাশক স্প্রে করার প্রয়োজনীয়তা অনেকাংশে কমিয়ে এনেছে।
সদর উপজেলর কোদালিয়া গ্রামের সুজন বলেন, আমি ১৫ কাটা জমিতে দেশি বেগুন চাষ করেছি। তাতে ব্যাপক পোকার আক্রমন দেখা দিয়েছে। স্প্রে করেও ভাল ফল পায়নি। এখানে দেখলাম বেগুনে কোন স্প্রে করা লাগবে না। এতে করে আমাদের উৎপাদন খরচ কমবে। ফলনও বেশি হবে। আমরা লাভবান হব।
ইউএসএইড এর ফিড দ্য ফিউচার এর অর্থায়নে ফিড দ্য ফিউচার ইন্সেক্ট রেজিস্ট্যান্ট এগপ্ল্যান্ট পার্টনারশিপ প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে, যেটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বৈশ্বিক ক্ষুধা ও খাদ্য নিরাপত্তা উদ্যোগ এর মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে ।
সভাপতিত্ব করেন যশোর আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড, কাউসার উদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানটি সার্বিক সঞ্চালনা করেন ড, নাসির উদ্দিন মাহমুদ।