যশোরে ব্যারিস্টার ছেলের বিরুদ্ধে মায়ের সংবাদ সম্মেলণ

যশোরের আলোচিত সেই ব্যারিস্টার ছেলে চৌগাছার মুর্তজা রাসেলের বিরুদ্ধে এবার সংবাদ সম্মেলণ করেছেন তার মা লতিফা হায়দার। সংবাদ সম্মেলণে তিনি জানান মুর্তজা বাবার জমি লিখে নিতে মাসহ পরিবারের সকল সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। বাড়ি ছাড়া হয়ে সন্তানদের নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন। তার স্বামী হায়দার কোথায় তা জানেন না। হায়দারের জমি ট্রাস্টে লিখে দিতে চাননা । কিন্তু জমি লিখে দিকে ব্যাধ্য করছেন রাসেল। এসব কাজে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছেন তার লন্ডন প্রবাসী সনদ ও সেখানকার ব্যারেস্টারী সনদ। শুধু তাই নয়, তাদেরকে নিয়ে সুপার এডিট করা ভিডিও ব্যবহার করে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। বর্তমানে মুর্তজার অত্যাচারে তারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। শনিবার বেলা ১২ টায় প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলনে এসমব অভিযোগ করেন অসহায় মা। এদিকে, মায়ের সংবাদ সম্মেলনের খুবর শুনে একঘন্টার মধ্যেই হাজির জন ছেলে মুর্তজা রাসেল। তিনি পাল্টা মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে মা লতিফা হায়দার আরও বলেন, সব দুয়ার তাদের বন্ধ হয়ে গেছে। পুলিশ তাদের অভিযোগ নিচ্ছেনা। সাংবাদিকের কাছে ঠাই নেই। পুলিশেল অভিযোগ করলে পাল্টা মামলা হয় তাদের নামে। যে সন্তানকে জীবনের সবটুকু দিয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে ব্যারিস্টার করেছেন। সেই সন্তানই মাকে আজ কারাগারে পাঠানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। এরমাঝে তার স্বামীকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে তার নামে দুইটি মামলা করেছেন। তার পাঁচসন্তানকেও এ মামলার আসামি করেছে। মামলা খেয়ে তারা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তিনি অভিযোগ করেন, সুচিকিৎসার জন্য আমার স্বামীকে লন্ডনে নেয়ার কথা বলে কোথায় রেখেছে কেমন রেখেছে তা নিজেও জানেন না।

তিনি বলেন, মুলত ২০০৭ সালে মুর্তজা লন্ডনে যান। তার পেছনে পরিবারের খরচ হয় ২০ লাখ টাকা। ২০১১ সালে গোপনে দেশে এসে বিয়ে করেন। এসব বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয় । সর্বশেষ ২০১৬ সালে উচ্চ শিক্ষার জন্য আরও ৩৭ লাখ টাকা দেয়া হয়। যা ফেরত দেয়ার শর্তে। কিন্তু ওই টাকা ফেরত না দেয়ায় গোলোযোগ শুরু হয়। পরে ২০২২ সালে দেশে এসে জমি লিখে নিতে চান। না দেয়ায় ট্রাস্টে সব জমি দানের ষড়যন্ত করে। আর ওই ট্রাস্টের সভাপতি তিনি নিজে হতে চান। এতে বাধা দেয়ায় আজ এ করুন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়েছে গোটা পরিবারকে।

তার বড় মেয়ে বিউটি বলেন, তার বাবা চৌগাছার মাকাপুর ধনীবাড়ির হায়দার এখন ভারসাম্যহীন। ১০০ বিঘা জমির মধ্যে ৫০/৬০ বিঘা জমি ইতিমধ্যে মুর্তজা হজম করেছেন। বাকি আছে ৩৯ শতক জমি দখলে নিতে এখন মরিয়া হয়ে উঠেছে। তাদেরকে দিয়েই কিছু ভিডিও সুপার এডিট করে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে আমার বিরুদ্ধে মামলার হাতিয়ার হিসেবে কাজ করিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তারা সমস্যায় পরলে পাশের গ্রামের বাসিন্দা ও পারিবারিকভাবে সম্পর্ক থাকা সাংবাদিক পরিচয়ধারী শামীমের কাছে সহযোগিতা চান। কিন্তু সে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। টাকা না দেয়ায় মুর্তজার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে শামীমের পক্ষ নিয়ে কোনো যাচাই বাছাই ছাড়াই মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে।

এদিকে, সংবাদ সম্মেলনের খবর শুনে রাসেলও প্রেসক্লাব যশোরে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করতে ছুটে আসে। তিনি দাবি করেন, মুলত তার বাবাকে হত্যা চেষ্টা করছিলো ভাই বোনেরা। যা তিনি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে টের পেয়েছেন। ফলে দেশে এসে আদালতের মাধ্যমে বাবাকে জিম্বায় রেখেছেন তিনি। এখন মা ভাইরা তাকে নানা ধরণের হুমকি দিচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন।

মুর্তজার পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চৌগাছা উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এসএম হাবীব, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, ফুফু হামিদা বেগম, শাহিদা বেগম , বিশাল প্রমুখ।#