যশোরে এতিম শিশুকে ৯ মাস ধরে নির্যাতন

যশোরে ৯৯৯-এ কল পেয়ে এক গৃহপরিচারিকাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া ভুক্তভোগীকে নির্যাতনের অভিযোগে এক দম্পতিকে আটক করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, গত নয়মাস ধরে তাকে নির্যাতন করে আসছিল ওই দম্পতি।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যশোর শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া এলাকার শহিদুল ইসলামের বাড়িতে ৯ মাস আগে শামীম আহম্মেদ ও জিন্নাত নামের এক দম্পতি বাসা ভাড়া নেন। এই দম্পতির বাড়ি দিনাজপুরে। পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে ওই দম্পতি দিনাজপুরের খানসামা এলাকার ১৩ বছর বয়সী এক এতিম শিশুকে গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজে নেন। শুরু থেকেই এই দম্পতি ভুক্তভোগীর ওপর নির্যাতন করতে থাকেন।

দুই দিন আগে ভুক্তভোগী শিশুকে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটতে দেখেন বাড়ির মালিক শহিদুল ইসলাম। শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে তিনি এ সম্পর্কে জানতে চান। এরপর ভুক্তভোগী তার ওপর করা নির্যাতনের কথা জানায়। এরপর শহিদুল ৯৯৯-এ কল দিলে পুলিশ এসে ওই শিশুকে উদ্ধার করে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভুক্তভোগী জানায়, ওই দম্পতি কাজের জন্য তাকে সময় নির্ধারণ করে দিত। এমনকি ছাদে কিংবা বাইরে কোনো কাজে গেলেও সেখান থেকে ফেরার জন্য সময় নির্ধারণ করে দিত। আর এ সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে না পারলে তাকে নির্যাতন করা হতো। হাত-পা-মুখ বেঁধে রুটি বেলার বেলুন, রেঞ্জ আর ডিস লাইনের তার দিয়ে তাকে মারধর করা হতো। একই সাথে এসব কথা কাউকে না বলার জন্য তাকে ভয় দেখানো হতো।

এদিকে মারপিটের বিষয়টি স্বীকার করে ঘটনাটিকে লজ্জাজনক বলেছেন অভিযুক্ত গৃহকর্তা শামীম আহম্মেদ।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. বেলাল হোসাইন বলেন, ৯৯৯-এ কল পাওয়ার পরপরই ভুক্তভোগী গৃহপরিচারিকাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ। এ ঘটনায় রাতেই অভিযুক্ত দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় যশোর কোতয়ালি থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

যশোর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুণ-অর-রশিদ বলেন, শিশুটি বর্তমানে ঝুঁকি মুক্ত হলেও তার শরীরের সব জায়গায় নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। তবে তাকে দ্রুত শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।