হঠাৎ করেই বিতর্কের জালে জড়াল লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আঁকা বিশ্বখ্যাত ছবি সালভাতোর মুন্দি।
এ ছবিটি মোনালিসা, দ্য লাস্ট সাপার ছবিগুলোর চেয়েও দামি। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ম্যাথিউ ল্যান্ড্রাসের এক বিস্ফোরক দাবিতে হতভম্ব হয়ে পড়েছে সারাবিশ্ব।
দ্য গার্ডিয়ানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেন, ৪৫ কোটি ডলার মূল্যের এ ছবিটি আসল নয়, জাল ছবি!
সেটি লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আঁকাই ছবি নয়, এর একটি রেপ্লিকা মাত্র।
সালভাতোর মুন্দি এর অর্থ পৃথিবীর পরিত্রাতা। বেশ কয়েকবার নিলামে উঠেছিল এ ছবিটি।
তবে শেষবারের নিলামে গত বছর প্রায় ৪৫ কোটি ডলারে সালভাতোর মুন্দি ছবিটি সৌদি আরবের এক রাজকুমার কিনে নেন।
কিছু দিন আগে জানা যায়, সৌদির সেই রাজকুমার আবু ধাবির ল্যুভ্রে ছবিটির বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছেন।
তবে হঠাৎ গবেষক ম্যাথিউ ল্যান্ড্রাসের এমন মন্তব্যের পর ছবিটির প্রদর্শনী অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে।
২০০৬ সালে লিওনার্দোর শিল্পকর্ম নিয়ে একটি বই লিখেছিলেন ম্যাথিউ ল্যান্ড্রাস।
সেই বইয়ের সংশোধিত সংস্করণে সালভাতোর মুন্দি ছবিটি নিয়ে সবিস্তার ব্যাখ্যা করবেন বলে জানিয়েছেন ম্যাথিউ।
তার আগেই তিনি দাবি করেছেন, এটি লিওনার্দোর ছবি বটে; কিন্তু ছবিটি তার সহকারীদের আঁকা।
বিশেষত বার্নার্দিনো লুইনির আঁকা শিল্পকর্মের সঙ্গে এ ছবিটির অনেক মিল পেয়েছেন গবেষক ম্যাথিউ ল্যান্ড্রাস। লুইনি বহু বছর ভিঞ্চির সঙ্গে কাজ করেছেন।
তবে ম্যাথিউস এটিও বলেছেন, ষোড়শ শতকে একটি ছবির পেছনে অনেকে মিলে কাজ করতেন। তাই এ ছবিটির শিল্পী কে, এ প্রশ্নের উত্তর এত সহজে দেয়া যাবে না। তার উপযুক্ত ব্যাখ্যা প্রয়োজন।
সালভাতোর মুন্দি হারিয়ে গিয়েছিল সাভাতোর মুন্দি। ২০০৫ সালে ছবিটির সন্ধান পাওয়া যায়।
সেই সময় ১০ হাজার ডলারে নিউ অর্লিয়্যান্সের একটি নিলাম সংস্থা থেকে সেটি কিনে নেন এক দল শিল্প সংগ্রাহক।
এত কমমূল্যে তখন এটি কিনে নেয়ার কারণ ছিল, রেনেসাঁ আমলের ছবি মনে হলেও তখন কারো ধারণাই ছিল না যে, এটি দ্য ভিঞ্চির আঁকা।
কারণ ততদিনে মূল ছবির ওপর রঙের প্রলেপ চাপানো হয়েছে। ধীরে ধীরে সেই রঙের আস্তরণ সরিয়ে বেরিয়ে আসে দ ভিঞ্চির আঁকা ছবি।
জানা যায়, ফরাসি সম্রাট দ্বাদশ লুইয়ের জন্য ১৫০০ সালে ছবিটি আঁকা শুরু করেন ভিঞ্চি।
শিল্প গবেষকদের মতে, যিশুর প্রতিকৃতির সঙ্গে মিল রেখে আঁকা লিওনার্দোর এটিই শেষ বড় কাজ।