ওবায়দুল কাদেরকে বিএনপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান রিজভীর

ruhul kabir rizvi
ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে বিএনপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন রুহুল কবির রিজভী।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, খালেদা জিয়া ও সারা দেশে বিএনপির বন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে আগামীকাল শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় ঢাকার রমনায় ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ মিলনায়তনে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হবে।

এ ছাড়া পরের দিন শনিবার ঢাকা বাদে একই দাবিতে দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হবে।

সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বিভিন্ন বক্তব্যের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রতিনিয়ত বিএনপিকে উপদেশ দিচ্ছেন। সভা-সমিতি, মঞ্চ, গণমাধ্যম ও ব্রিফিংয়ে বিএনপির কী করা উচিত, বিএনপির কী পরিণতি হবে, বিএনপি নির্বাচন ভীতিতে ভুগছে, বিএনপি সংসদে যোগ দেবে ইত্যাদি নানা কথার খৈ ফোটাচ্ছেন তিনি।’

‘সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী হিসেবে ওবায়দুল কাদের সাহেব শালীনতা, ভব্যতার গুণমান বিবেচনা না করে বিএনপির বিরুদ্ধে ক্রমাগত উপদেশের ভাঙা টেপ রেকর্ডার বাজিয়েই চলেছেন। মিডনাইট ইলেকশনের সরকারের মন্ত্রী হিসেবে ওবায়দুল কাদের সাহেব এখন স্বেচ্ছায় বিএনপির উপদেষ্টা হতে চলেছেন।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, ‘খামোখা আওয়ামী লীগে থেকে তাঁর লাভ কী, বরং ওবায়দুল কাদের সাহেবকে বিএনপিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বিএনপির দরজা খোলা আছে। এমনিতেই অনাচারের পাহাড়সম স্তূপে আওয়ামী নেতাকর্মীরা ভীতসন্ত্রস্ত, কখন কী হয় আতঙ্কে তাঁদের সারা দিন কাটে। বিভিন্ন এলাকায় তারা তলে তলে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা শুরু করেছেন। ক্ষমতার বৃক্ষ উপড়ে যাওয়ার পর অনাগত ভবিষ্যৎ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা গভীর দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। সে জন্য স্বেচ্ছায় বিএনপির উপদেষ্টার আসনে বসতে চাচ্ছেন ওবায়দুল কাদের সাহেবসহ অন্য নেতারা।’

নতুন সরকারের প্রথম অধিবেশনে সংসদে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিএনপি সংসদে না গেলেও প্রতিনিয়ত বিএনপি ও জিয়া পরিবারকে নিয়ে সংসদে বিষোদগার করছেন প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপি নেতা বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে এ সময় আরো বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচন কর্মকর্তা ও প্রশাসনের লোকদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ভোটের আগের দিন রাতে ব্যালট বাক্স পূর্ণ করলে ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু তো হবেই। মহাজোটের শরিকরাও এখন বলছে যে ভোট হয়েছে আগের দিন রাতেই।’

‘পথের কাঁটা সরানোর জন্য খালেদা জিয়ার মতো বিপুল জনপ্রিয় একজন জাতীয় নেত্রীকে এক বছর ধরে কারাগারে আটকিয়ে রেখেছে’ উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘দাগি খুনিদের মুক্তি দিয়ে নির্দোষ ব্যক্তি জাহালমকে তারা জেল খাটায়। বাহুবলে বিরোধী শক্তিকে তারা নির্মূল করার চেষ্টায় লিপ্ত। জাতীয় থেকে তৃণমূল স্তর পর্যন্ত দুর্নীতির বিস্তার, নারী-শিশু নির্যাতনের ভয়ংকর প্রকোপ, সড়কে মৃত্যুর মিছিল, গুম ও খুনের ভয়াবহ আধিপত্য, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হরণসহ দেশব্যাপী গণতন্ত্র এখন হাহাকার করছে। ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার নীতির প্রতি যারা অবাধ্য, তাদের ঠিকানা হচ্ছে কারাগার।’

খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্র করে আটকে রাখা হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, ‘এটি অপরিসীম জনপ্রিয় জাতীয়তাবাদী নেত্রীর বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি শক্তির নিষ্ঠুর প্রতিশোধের খেলা। আইন আদালতকে প্রভাবিত করেই খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। আমরা এ মুহূর্তে তাঁর নিঃশর্ত মুক্তি চাই।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শাহিদা রফিক, নাজমুল হক নান্নু, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।