১৯৮৮ সালে ডিজিটাল ক্যামেরা, ই-মেইল ব্যবহার করতেন মোদি!

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ‘মেঘ’ ও ‘রাডার’ নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে তুমুল সমালোচনায় পড়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্দ্রী নরেন্দ্র মোদি। এবার ওই সাক্ষাৎকারের আরও একটি অংশ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে তোলপাড়।

এবার সাক্ষাৎকারে মোদি দাবি করেছেন, ১৯৮৮ সালে ডিজিটাল ক্যামেরা এবং ই-মেইল ব্যবহার করেছিলেন তিনি। এমন দাবি করে কার্যত হাসির খোরাক হয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

নিজেকে দেশের প্রথম ডিজিটাল ক্যামেরা ব্যবহারকারী হিসেবেও দাবি করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মোদি। সেখানে তিনি দাবি করেছেন, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বালাকোটে অভিযানে যখন বিশেষজ্ঞরা খারাপ আবহাওয়া নিয়ে চিন্তিত ছিলেন তখন তিনিই বলেছিলেন, মেঘের আড়ালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজকে ধরতে পারবে না পাক রাডার।

তা নিয়ে রোববার সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলড হন মোদি। তার ওই মন্তব্য নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ চলে দিনভর। রাত পোহাতেই সোমবার সাক্ষাৎকারের আরও একটি অংশ ভাইরাল হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে প্রযুক্তি এবং গ্যাজেটে তিনি এত স্বচ্ছন্দ কীভাবে-প্রশ্ন করা হলে জবাবে মোদি জানান, বরাবরই নতুন প্রযুক্তির প্রতি তার আকর্ষণ বেশি, গ্যাজেট নিয়ে আগ্রহী।

কিন্তু তারপরই একটি উদাহরণ দিতে গিয়েই বাধে বিপত্তি। তিনি বলেন, ‘সম্ভবত আমিই দেশে প্রথম ডিজিটাল ক্যামেরা ব্যবহার করেছিলাম। সেটি ১৯৮৭-৮৮ সাল হবে। তখন খুব কম মানুষের ই-মেইল ছিল। আমার এখানে বীরমগামে আদভানির সভা ছিল। আমি ডিজিটাল ক্যামেরায় ছবি তুলি। তখন ডিজিটাল ক্যামেরা অনেক বড় হতো। আমার কাছে তখন ছিল। আমি ছবি তুলে দিল্লিতে পাঠিয়ে দিই। পরের দিন রঙিন ছবি ছাপা হয়। আদভানিজি আশ্চর্য হয়েছিলেন যে, একদিনের মধ্যে দিল্লিতে কীভাবে রঙিন ছবি ছাপা হলো?’

সাক্ষাৎকারের এই অংশ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনরা। কারণ জাপানি ক্যামেরা প্রস্তুতকারী সংস্থা নিকন প্রথম বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্য ডিজিটাল ক্যামেরা বাজারে আনে ১৯৮৬ সালে। যুক্তির ক্ষেত্রে যদিও বা মেনে নেওয়া যায়, কিন্তু বাস্তবে মাত্র এক-দু’বছরের মধ্যেই ডিজিটাল ক্যামেরা ভারতে এসেছিল এবং তা মোদির হাতে ছিল, এটা মানতে পারছেন না নেটিজেনরা।

আর ই-মেইল প্রথম চালু হয় ১৯৯৫ সালে। আটের দশকে ভারতে ই-মেইল দূরের কথা, ইন্টারনেটের ধারণাও খুব কম মানুষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কারণ বিএসএনএল ভারতে প্রথম ইন্টারনেট পরিষেবা শুরু করে ১৯৯৫ সালে। ফলে মোদির ই-মেইল সংক্রান্ত দাবি পুরোপুরি অসম্ভব।

এরপরই ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপের ঝড় বইতে শুরু করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মোদিকে আক্রমণ শুরু করেছেন কংগ্রেসসহ বিরোধী দলের নেতারাও।