‘প্যারোল নয়, জামিনের হকদার খালেদা’

khaleda zia
ফাইল ছবি

দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিনের জন্য পুনরায় আদালতে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।

প্যারোলে নয়, বিএনপি প্রধান জামিন পাওয়ার হকদার এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘যে মামলায় তাকে (খালেদা) আটকিয়ে রাখা হয়েছে সেই মামলায় তিনি নির্দোষ। এই মুহূর্তেই তিনি জামিন পাওয়ার হকদার। আমরা আইনজীবীরা তাই মনে করি।’

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী।

জয়নুল আবেদীন বলেন, ইতোমধ্যে সাতজন সংসদ সদস্য জেলখানায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তারা এসে অত্যন্ত পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন খালেদা জিয়া আগের চেয়ে অনেক অসুস্থ। আমরা লক্ষ্য করছি খালেদা জিয়াকে নিয়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্যারোল সংক্রান্ত বিষয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। খালেদা জিয়া বাংলাদেশের গণমানুষের নেত্রী, আপসহীন নেত্রী।

সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ের কথা উল্লেখ করে বিএনপি প্রধানের এই আইনজীবী বলেন, ‘সাবেক ১/১১’র সরকারও খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করার জন্য প্যারোলের নাম করে বিদেশ পাঠাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু খালেদা জিয়া অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে তা প্রত্যাখ্যান করেছেন, যা জাতির কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। খালেদা জিয়া তখনই জানিয়েছিলেন তার বিদেশে কোনো বাড়ি ঘর নেই। বিদেশে কোনো ঠিকানা নেই। তিনি এ দেশের মানুষ। এ দেশেই থাকতে চান।

খালেদা জিয়াকে আটকিয়ে বর্তমান সরকারও রাজনীতির মাঠ থেকে এবং জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করার ষড়যন্ত্র করছে। ইতোমধ্যে তিনি সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে পরিষ্কার করেছেন, যে মামলায় তাকে আটকিয়ে রাখা হয়েছে সেই মামলায় তিনি নির্দোষ। এই মুহূর্তেই তিনি জামিন পাওয়ার হকদার। আমরা আইনজীবীরা তাই মনে করি।’

সরকার আদালতে আপত্তি জানানোতেই বেগম জিয়ার জামিন হচ্ছে এমন অভিযোগ করে খালেদার জামিন আবেদনের বিরোধিতা না করতে সরকারকে অনুরোধ জানান তিনি।

সরকার হস্তক্ষেপ না করলে খালেদা জিয়া জামিন পাবেন এমন মন্তব্য করে খালেদা জিয়ার এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বলেন, অতি সম্প্রতি আমরা কয়েকবার জামিন আবেদন নিয়ে আদালতে গিয়েছিলাম। প্রতিবারেই সরকারের পক্ষ থেকে জোরালো আপত্তি করা হয়েছে। আমরা জামিনের জন্য পুনরায় আদালতে যাবো। আমরা আশাকরি সরকার যে কথা বলছেন যে, আদালত জামিন দিলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। তাদের এ কথাটি সরকারি আইন কর্মকর্তার মাধ্যমে আদালতে জোরালোভাবে জানাবেন এটাই আমরা আশা করি।

খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে সরকারের তরফ থেকে দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে জয়নুল আবেদীন বলেন, সরকার একদিকে বলছে, আদালত জামিন দিলে তাদের কোনো আপত্তি নেই। এটা কয়েকদিন পর্যন্ত বলে যাচ্ছে। আগেও বলেছে। অথচ আমরা যখন আদালতে জামিন আবেদন শুনানি করি তখন সরকারের পক্ষ থেকে জোরালোভাবে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। যদিও এ ধরনের মামলায় আমরা কখনও সরকারপক্ষ থেকে এভাবে জোরালো আপত্তি করতে দেখিনি। কিন্তু খালেদা জিয়ার মামলায় জোরালো আপত্তি করার ফলে বারবার আমরা জামিন আবেদন শুনানি করার পরও তিনি জামিন পাচ্ছেন না।’

সরকারের এ ধরনের বক্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে উল্লেখ করে জয়নুল আবেদীন বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে যে, সরকার তো কোনো আপত্তি করে না। অথচ জনগণ জানে না সরকারপক্ষ থেকে দেশের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা কীভাবে আদালতে জোরালোভাবে আপত্তি উত্থাপন করে। বাস্তবিক সরকারের পক্ষ থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হয় তা একবারে অসত্য।