বাগদাদি হত্যা অভিযানের ফুটেজ ও নতুন তথ্য প্রকাশ করলো যুক্তরাষ্ট্র

সম্প্রতি সিরিয়ার ইদলিবে আইএস নেতা আবু বকর আল বাগদাদির বিরুদ্ধে চালানো অভিযানের প্রথম ফুটেজ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাতে দেখা যায়, একটি বাড়ির প্রাঙ্গণ থেকে গুলি চালাচ্ছে জঙ্গিরা। ওই বাড়িতেই লুকিয়ে ছিলেন বাগদাদি। পরে হামলা তীব্র হয়ে ওঠলে মাটির নিচে সুরঙ্গে পালান তিনি। সেখানে দুই সন্তানসহ নিজেকে উড়িয়ে দেন তিনি। অভিযান শেষে বাড়িটি ধ্বংস করে দেয়া হয়। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।

খবরে বলা হয়, গত সপ্তাহে মার্কিন অভিযানে বাগদাদি নিহতের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। বলেন, কুকুরের মতো মৃত্যু হয়েছে তার।

হামলা থেকে বাঁচতে সুরঙ্গে ঢুকেছিলেন বাগদাদি। কিন্তু তার পেছনে ধাওয়া করে মার্কিন সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষিত কুকুর। এর আগেই তিন সন্তান সহ নিজেকে উড়িয়ে দেন আইএস নেতা। এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করেছে সিরীয় কুর্দি, রাশিয়া, তুরস্ক ও সিরিয়া সরকার। সবচেয়ে বড় সহযোগিতা করেছে কুর্দিরা। সিরীয় কুর্দি কর্মকর্তারা জানান, তারাই বাগদাদির অবস্থান নিশ্চিত করেছিল। বাগদাদির ঘনিষ্ঠ চক্রের মধ্যে তাদের একজন গুপ্তচর ছিল।
এদিকে, সম্প্রতি হামলা অভিযানটি নিয়ে নতুন এক তথ্য দিয়েছেন মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল কেনেথ ম্যাকেনজি।
তিনি বলেছেন, বাগদাদির সঙ্গে তার দুই সন্তান মারা গেছে। যদিও ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তিন সন্তান সহ মৃত্যু বেছে নিয়েছিলেন বাগদাদি। ট্রাম্পের অন্যান্য বক্তব্য নিয়েও অস্পষ্টতা দেখা দিয়েছে। তিনি দাবি করেছিলেন, মৃত্যুর আগে চিৎকার করছিলেন বাগদাদি। কিন্তু ম্যাকেনজি এমন কোনো তথ্য নিশ্চিত করতে পারেননি।

ম্যাকেনজি বলেন, বাগদাদি তার সঙ্গে দুই শিশুকে নিয়ে সুরঙ্গে ঢুকে পড়েন। সেখানেই নিজেকে বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেন। এ থেকেই বোঝা যায় তিনি কেমন মানুষ ছিলেন। আমার পর্যবেক্ষণে এর চেয়ে বেশি কিছু ধরা পড়েনি। জীবনের শেষ মুহূর্তে বাগদাদি আর কী করেছেন তা আমি নিশ্চিত করতে পারবো না।

তিনি আরো বলেন, হামলায় আত্মঘাতী ভেস্ট পরা চার নারী ও এক পুরুষকেও হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া, হেলিকপ্টার থেকে করা গুলিতেও বেশ কয়েকজন মারা গেছে। তবে তাদের সংখ্যা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, আমি এটা নিশ্চিত করতে চাই যে, উচ্চ পর্যায়ের এই অভিযানটিতে তীব্র চাপ থাকা সত্ত্বেও বেসামরিক নাগরিক হতাহতের ঘটনা এড়ানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হয়েছে।

সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জানান, বাগদাদির পরিচয় সনাক্ত করা হয়েছিল তার ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে। ২০০৪ সালে ইরাকী কারাগারে বন্দি থাকার সময় তার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে রাখা হয়েছিল। তার মৃত্যুর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পরিচয় সনাক্ত করে তাকে সমুদ্রে সমাহিত করা হয়। জেনারেল ম্যাকেনজি জানান, বাগদাদির মৃত্যুর প্রতিশোধ হিসেবে হামলা চালাতে পারে আইএস।