ভারতের সবচেয়ে বড় বস্তিতে করোনার থাবা, ঝুঁকিতে বিশাল সংখ্যক মানুষ

ভারতের মুম্বাইয়ের সবচেয়ে বড় বস্তি ধারাভিতে ঢুকে পড়েছে করোনাভাইরাস। ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

বাণিজ্য নগরীর ঠিক কেন্দ্রে অবস্থিত ওই বস্তিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় ঝুঁকিতে রয়েছেন বিশাল সংখ্যক মানুষ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ পরিস্থিতিতে সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বস্তির মতো এমন ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় শারীরিক দূরত্ব বজায় লাখা প্রায় অসম্ভব। এমনকি আক্রান্ত ব্যক্তি কাদের সংস্পর্শে এসেছেন, তা নির্ণয় করাও বেশ কঠিন।

ধারাভি বস্তিতে করোনায় মারা যাওয়া ব্যক্তির বয়স ৫৬। এরই মধ্যে ওই ব্যক্তির বাড়ি সিল করে দেয়া হয়েছে। বাড়ির বাকিদের করোনা পরীক্ষা হয়েছে। সব মিলিয়ে ভারতে করোনায় মারা গেছেন ৫০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫৫৭ জন। তার মধ্যে অন্ততপক্ষে ২০০ জন তবলিগের জমায়েত থেকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মোট আক্রান্ত এক হাজার ৯৬৫ জন।

ধারাভি বস্তির বাসিন্দা ওই বৃদ্ধের নমুনায় করোনাভাইরাসের খোঁজ পাওয়ার পরে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাণিজ্যিক নগরীতে। ভারতে করোনা সংক্রমণ তালিকার শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্রে।

ধারাভি বস্তি এশিয়ার মধ্যেও সবচেয়ে বড়। ৬১৩ একর জমির ওপরে গড়ে ওঠা বস্তিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এককথায় অসম্ভব। তার জেরে ভয়াবহ সংক্রমণ বস্তির ১৫ লাখের বেশি বাসিন্দার মধ্যে কী বিশাল সংকট তৈরি করবে, তা ভেবে শিউরে উঠছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।

বস্তিবাসীর জীবনযাপনে স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাস্তবে সম্ভব নয়। বাসস্থানে নেই পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ও চলাচলের সুবিধা। রয়েছে পানির তীব্র অভাবও। ধারাভিতে একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া যাওয়ায় অচিরে গোটা মুম্বাই শহর ও সংলগ্ন এলাকা যে গভীর বিপদের মুখে পড়তে চলেছে, তা সহজেই অনুমেয়। তবে নানা আশার বাণী ও প্রতিশ্র“তি দিয়ে যাচ্ছে সরকার।

মহারাষ্ট্র স্বাস্থ্য মিশনের কর্মকর্তা সতীশ পাওয়ার ধারাভি বস্তিতে সম্ভাব্য সংক্রমণের মোকাবেলায় আইসোলেশনের সুবিধা দেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছিলেন। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা কতটা বাস্তবায়িত হবে, তাই নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। লকডাউনে নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গকারীদের কড়া শাস্তি হবে বলে ঘোষণা করেছেন মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ।