আলোচনায় বসছে রাশিয়া-ইউক্রেন

ইউক্রেনজুড়ে এখন শুধুই সামরিক যান। একদিকে রুশ বাহিনীর বিচরণ, অন্যদিকে ইউক্রেন সেনাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি। এরই মধ্যে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদল।

সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনের উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে রুশ বার্তা সংস্থা তাসও এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত সপ্তাহে ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরুর পর এটি দুই পক্ষের মধ্যে প্রথম বৈঠক। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর ফোনালাপের পর এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের উপস্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভগিনি ইয়েনিন নিশ্চিত করেছেন, স্থানীয় সময় আজ সোমবার সকালেই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে তাসের প্রতিবেদনে বলা হয়, এটি (আলোচনা) স্থগিত হয়নি। সোমবার সকালেই আলোচনা হবে।

এর আগে রুশ প্রেসিডেন্টের সহযোগী ভ্লাদিমির মেদিনস্কি বলেন, বেলারুশের গোমেল অঞ্চলে আলোচনায় বসা নিয়ে ইউক্রেনীয় পক্ষের সঙ্গে তাদের একটি সমঝোতা হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মেদিনস্কি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র তাসকে বলেছেন, ঠিক কোন জায়গায় আলোচনা হবে, তা প্রকাশ করা হবে না।

গতকাল রোববার রুশ সংবাদ সংস্থাগুলোতে পাঠানো বিবৃতিতে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছিলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রয়েছে।

আলোচনা করার জন্য ইতোমধ্যে মস্কো থেকে একটি প্রতিনিধিদল বেলারুশের গোমেল শহরে পৌঁছেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এরপর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছিলেন, তিনি রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত আছেন। তবে বেলারুশে আলোচনা অনুষ্ঠিত হলে, তাতে অংশ নিতে রাজি নন তিনি।

পরে আবার এক বিবৃতিতে জেলেনস্কির কার্যালয় থেকে জানানো হয়, কোনো ধরনের পূর্বশর্ত ছাড়া প্রিপিয়াত নদীর কাছে ইউক্রেন-বেলারুশ সীমান্তে রুশ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আলোচনায় বসবে ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদল।

এ সময় বেলারুশ ভূখণ্ড থেকে যেন কোনো বিমান বা হেলিকপ্টার না উড়ে যায় কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র না ছোড়া হয়, তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন লুকাশেঙ্কো।

এদিকে, ইউক্রেন ইস্যুতে জরুরি এক বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ। নিরাপত্তা পরিষদে বৈঠকে বসতে ভোটাভুটি হলে ১১টি দেশ এতে সম্মত হয়।

এ ছাড়াও ইউক্রেনে চলমান সামরিক অভিযানের মধ্যেই পারমাণবিক অস্ত্রের দায়িত্বে থাকা বাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন।

এর মধ্যেই ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহের ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। একই সঙ্গে রুশ বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ ঘোষণা করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। এ অবস্থায় সংঘাত বন্ধে রাশিয়ার সঙ্গে শর্তহীন আলোচনায় রাজি ইউক্রেন।