‘আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপিই দেউলিয়া হয়ে গেছে’

বিএনপি দেউলিয়া হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ নয়, বিএনপি-ই দেউলিয়া হয়ে গেছে। কেননা বিএনপি মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে আর জাতিসংঘ মহাসচিবের ভূয়া চিঠি দেখিয়ে বলে- জাতিসংঘ তাদের ডেকেছে। নিজ দলের চেয়ারপারসনের মামলার রায়ের আগে গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করে দুর্নীতিবাজ ও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে নেতৃত্বে থাকার সুযোগ করে দিয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডই তাদের দেউয়ালিয়াপনা প্রকাশ করে।’

রাজধানীতে নির্বাচনি গণসংযোগের ষষ্ঠ দিনে শনিবার (৬ অক্টোবর) চকবাজারের সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এক বক্তব্যের জবাবে এসব কথা বলেছেন ওবায়দুল কাদের।

এসময় ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বা সরকারের দেউলিয়া হওয়ার কোনও কারণ নেই। কেননা দেশের উন্নয়ন করে বিশ্বে মর্যাদার আসনে নিয়ে গেছে সরকার। বাংলাদেশ এখন নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ। আওয়ামী লীগ ছোট-খাটো কর্মসূচি দিলেই ব্যাপক জনসমাগম হয়। কিন্তু বিএনপির অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তারা ১০ বছর ধরে আন্দোলনের কথা বলে আসলেও আন্দোলন করতে পারেনি। দলটির নেতারা একে অপরকে সরকারের দালাল বলে গালাগালি করে। ’

মির্জা ফখরুলের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘আপনি মওদুদ আহমদের কথা যতো শুনবেন, ততো পচবেন, ততো নিচে নামবেন।’

সম্প্রতি মওদুদ আহমেদের ‘এক মাসের মধ্যে দেশে পরিবর্তন আসবে’ বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘পরিবর্তন হলে বিএনপিরই হবে। দেশে এমন কোনও সংকট নেই যে, পরিবর্তন হতে হবে। যদি কিছু পরিবর্তন হতে হয়, সেটা বিএনপিরই হতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজনীতির মানবিক মূল্যবোধ নষ্ট করেছে বিএনপি। এর আগে মানবিক মূল্যবোধ ছিল, খালেদা জিয়া কোনও বিপদে পড়লে চলে যেতেন শেখ হাসিনা। হাসপাতালে ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ কর্মীরা দেখতে গিয়েছেন। খালেদা জিয়ার সন্তান মারা যাওয়ায় দেখতে গেলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কী আচরণ করেছেন দেশবাসী জানে। তারাই রাজনীতির মানবিক মূল্যবোধ নষ্ট করেছে।’

গণসংযোগে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সবিস্তারে তুলে ধরেন সেতু মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশ বাঁচবে, উন্নত হবে। আর সেজন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্বেও বিকল্প নাই। মুক্তিযুদ্ধেও চেতনা ও স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে বাঁচাতে হলে শেখ হাসিনাকে সরকারে রাখতে হবে। দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির ধারা অক্ষুন্ন রাখতে হলে শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করতে হবে।’

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোনও দখলবাজ, চাঁদাবাজ আগামী নির্বাচনে নৌকার টিকিট পাবেন না। এখন যারা মনোনয়ন দৌড়-ঝাঁপে আছেন, জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক থাকতে হবে তাদের। কোনোপ্রকার অসুস্থ রাজনীতিতে লিপ্ত হওয়া যাবে না। একজন অন্যজনের ওপর কাঁদা ছুড়বেন না। জনপ্রিয়তা যার বেশি, আমরা তাকেই মনোনয়ন দেবো।’

স্থানীয় সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম এনামুল হক শামীম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবুল হাসনাত, সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।