আমুল পরিবর্তন এসেছে যশোর আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে

যশোর আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয় আমুল পরিবর্তন এসেছে। যেখানে আগে চ্যানেল ছাড়া হয়রানীর শিকার হতে হয়েছে। সেখানে চ্যানেল ছাড়াও আবালবৃদ্ধ নারীপুরুষ ও শিশু কিশোরেরা পাসপোর্ট করতে সারিবদ্ধ ভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে পাসপোর্টের আবেদনপত্র জমা দিচ্ছে।

নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাগজপত্র সম্পূর্ন হলে আবেদন জমা নিতে আর বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দূরদূরান্ত থেকে আগত বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষসহ বিভিন্ন পেশার লোকজন। সম্প্রতি সহকারী পরিচালক সালেহ উদ্দিন যোগদান করার পর থেকে পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা আগের মতো আর হয়রানীর শিকার হচ্ছে না বলে বিভিন্ন সূত্রগুলো দাবি করেছেন। প্রতিদিন পাসপোর্টের কাগজপত্র সম্পূর্ণ হিসেবে যার আবেদন তিনি জমা দিচ্ছেন আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ের ৬নং ও ৭নং কাউন্টারে। নারীদের জন্য নিদিষ্ট ৭নং আর পুরুষদের জন্য ৬নং কাউন্টার নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ২শ’ থেকে আড়াইশ’ পাসপোর্ট প্রত্যাশিরা স্ব-শরীরে হাজির হয়ে আবেদনপত্র জমা দিচ্ছেন।

আবেদনপত্রের সাথে সংযুক্ত সকল কাগজের মূলকপি (যেমন, এনআইডি, জন্ম সনদ,পাসপোর্ট, এনওসি ইত্যাদি) সাথে আনতে হবে এবং প্রদর্শন করতে হবে বলে বিজ্ঞপ্তি কর্তৃপক্ষ ইতিপূর্বে কার্যালয়ে নোটিশ বোর্ডে ঝুলিয়ে দিয়েছে। আবেদনপত্র জমা প্রতিদিন সকাল ৯.৩০ টা হতে ১.০০ টা পর্যন্ত পাসপোর্ট ডেলিভারী সকাল ৯.৩০ টা হতে ৩.০০ টা পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা দিয়েছে নোটিশ বোর্ডে।

নোটিশ বোর্ডে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন,এতদ্বারা সম্মানিত পাসপোর্ট সেবা প্রত্যাশীদের সদয় অবগতির জন্য আরো জানিয়েছেন যে,পাসপোর্ট তথ্য সংশোধনের যে সকল ক্ষেত্রে হলফনামায় (এফিডেভিট) প্রয়োজন নেইঃ সেগুলি হচ্ছে,নিজ নাম,পিতার নাম,মাতার নাম ও স্বামী/স্ত্রীর নামের বানান সংশোধনের ক্ষেত্রে যতি উচ্চারণগত পরিবর্তন না হয় সেক্ষেত্রে হলফনামার (এ্যাফিডেভিট)এর প্রয়োজন নেই। যেমন ইংরেজী বিভিন্ন শব্দগত উচ্চারণ।

বর্তমান স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন সংশোধনের ক্ষেত্রে হলফনামার (এ্যাফিডেভিট) প্রয়োজন নেই। এছাড়া,পাসপোর্ট থেকে পদবী/ উপাধি/ খেতাব/ পরিচয় সূচক/সম্মান সূচক শব্দ বিয়োজনের (বাদ দেয়া) ক্ষেত্রে হলফনামার (এ্যাফিডেভিট) প্রয়োজন নেই। যেমন ইংরেজীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা,প্রফেসর,ইঞ্জিনিয়ার,ডক্টর,জার্নালিষ্ট,মেজর,ডাইরেক্টর,এডভোকেট,ব্যারিস্টার,আলহাজ,মাওলানা,হাজী,মীর,মিঃ,মিস,পিএসডি,পিএসসি,এনডিসি,পিপিএম,বিপিএম,লেট ইত্যাদি। স্বামী স্ত্রীর নাম সংযোজন বা বিয়োজন এর ক্ষেত্রে হলফ নামার ( এ্যাফিডেভিট) প্রয়োজন নেই। আবেদনকারীর চাহিদা অনুযায়ী নামের রিএ্যারেঞ্জ করার ক্ষেত্রে যেমন,ইংরাজী আব্দুর রহিম হতে রহিম আব্দুর অথবা রহিম আব্দুর হতে আব্দুর রহিম হলফনামার (এ্যাফিডেভিট) প্রয়োজন নেই। জন্মস্থান পরিবর্তন সংশোধনের ক্ষেত্রে হলফনামার (এ্যাফিডেভিট) প্রয়োজন নেই। যশোর আঞ্চলিক পাসপোর্ট কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে,পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা সারিবদ্ধভাবে তাদের সকল কাগজপত্র সম্পূর্ন আবেদন নিয়ে জমা গ্রহনকারীদের কাছে জমা দিচ্ছে। জমা দেওয়ার পর তাদের পাশ^বর্তী কাউন্টারে এন্ট্রি করে প্রাথমিক ফিঙ্গার নিয়ে প্রদানকৃত চাহিদা মোতাবেক আবেদন দিয়ে ছবি তোলার জন্য আবেদন কপি হাতে দেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে নারী ও পুুরুষদের জন্য পাসপোর্ট চুড়ান্ত করতে ছবি ও ছাপ নেওয়ার কার্যক্রম সম্পন্ন করে পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের হাতে একটি পাসপোর্ট সরবরাহ স্লিপ দেওয়া হচ্ছে। এভাবে প্রতিদিন আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম চলছে বলে নবাগত সহকারী পরিচালক মোঃ সালেহ উদ্দিন নিশ্চিত করেছেন।

তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন,জনবল সংকটের মধ্যেও প্রতিদিন পাসপোর্ট প্রত্যাশীদের সেবা দিতে নানান উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। দালাল থেকে সজাগ রাখতে অফিসের বিভিন্ন দেওয়ালে সচেতনমূলক বাক্য লেখা ও সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। দালালের খপ্পর থেকে সকলকে সাবধান করা হচ্ছে।

তিনি আরো জানান,মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আলাদা কাউন্টার ও ছবি তোলার ক্ষেত্রে অগ্র অগ্রধিকার রাখা হয়েছে। তাছাড়া,বয়স্ক,নারী পুরুষ ও অসুস্থ্যদের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা রাখা আছে। পাসপোর্ট আবেদনকারীরা যাতে হয়রানীর শিকার না হয় তার জন্য সর্বক্ষনিক তিনি অফিসের বিভিন্ন স্থান পর্যবেক্ষন করছেন। জনবল সংকট কেটে গেলে বর্তমান কর্মকান্ডর চেয়ে আরো অধিক সেবা প্রদান করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।