নকল নবিসদের চাকরি রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান

নকল নবিসদের চাকরি রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করাসহ বিভিন্ন দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বাংলাদেশ এক্সট্রা মোহরার অ্যাসোসিয়েশন ও বৈষম্য বিরোধী নকল নবীশ দাবি আদায় পরিষদ। প্রধান উপদেষ্টা বরাবর আজ যশোর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এই স্মরকলিপি প্রদান করা হয়।

অ্যাসোসিয়েশনের অন্য দাবিগুলো হচ্ছে নিবন্ধন অধিদপ্তরের প্রস্তাবিত (খসড়া) বিধিমালায় নকল নবিসদের কর্মচারী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা; নিবন্ধন ম্যানুয়াল অনুযায়ী স্থায়ী মোহরার, টিসি মোহরার, অফিস সহকারীসহ নবসৃষ্ট সব পদ জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে নকল নবিসদের মধ্য থেকে পদায়ন করা; বিতর্কিত দুর্নীতিবাজ সাবেক আইনমন্ত্রীর অবৈধভাবে নিয়োগ করা সব নিয়োগ বাতিল করা।

জেলা প্রশাসক আজহারুল ইসলাম স্মারকলিপি গ্রহণ করে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
স্মারকলিপি প্রদানকালে নেতৃবৃন্দ বলেন, নিবন্ধন অধিদপ্তরের আওতাধীন সব জেলা মহাফেজ খানাসহ ৫১৬টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত নিবন্ধনের জন্য নেওয়া দলিলগুলো অবিন্যাস যোগ্য স্থায়ী বালাম বইতে সঠিক ও নির্ভুলভাবে লিপিবদ্ধ করা ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থাসহ জনগণের চাহিদা মোতাবেক অবিকল নকল সরবরাহের কাজে রাজস্ব আদায়ের জন্য প্রায় ১৬ হাজার নকল নবিস কাজ করে আসছি।

কিন্তু দুঃখের বিষয় স্থায়ী রেকর্ড লিপিবদ্ধ করেও আমরা অস্থায়ী। বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, শিক্ষা সহায়ক ভাতা, তিনটি মৌলিক অধিকার এবং পবিত্র ঈদ বোনাস, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব ভাতাসহ সরকারি যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। নারী নকল নবিসরা বিনা পারিশ্রমিকে মাতৃত্বকালীন ছুটি ভোগ করেন। নকল নবিস পদটি সৃষ্টির পর থেকে আমরা বিভিন্ন সময়ে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি করে আসছি।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কর্মরত ১৬ হাজার ২৪৬ জন এক্সট্রা-মোহরার/নকল নবীশদের জাতীয়করণের দাবিতে ১৯৮২ সাল থেকে আন্দোলন চলছে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে মহান সংসদসহ সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তি ও কর্মকর্তারা নকল নবীশদের চাকরি জাতীয়করণের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর বহু সরকারের পালাবদল ঘটে। কিন্তু নকল নবীশদের খোঁজ কেউ রাখেনি।

তারা বলেন, নকল নবীশরা সরকারি কোনো বেতন ভাতা পান না। সমাজের মানুষ জানে তারা সরকারি চাকরি করেন। কিন্তু বাস্তবে নকল নবীশরা জমির দলিলের এক পৃষ্ঠা বালামে লিখলে মাত্র ২৪ টাকা মঞ্জুরি পায়। প্রকৃতপক্ষে এক পৃষ্ঠা বালাম লেখার জন্য জনগণের কাছ থেকে সরকার রাজস্ব নেয় ৪০ টাকা। সেখান থেকে নকল নবীশদের দেওয়া হচ্ছে ২৪ টাকা। বাকি ১৬ টাকা রাজস্ব খাতে জমা হচ্ছে। নকল নবীশদের টাকা দিয়েই তাদের চাকরি জাতীয়করণ করা সম্ভব। নকল নবীশদের দীর্ঘদিনের দাবি চাকরি জাতীয়করণ করা হোক। কিন্তু সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার অভাবে আমরা আজও অন্ধকারেই রয়ে গেছি।

তাই আমি আমাদের চাকরি স্থায়ীকরণ করার জন্য, বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা সভাপতি মোহাম্মদ আলী আকবর, সাধারণ সম্পাদক খাজা ফজিলাই উজ্জ্বল, সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি শিমুল আক্তার, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, নূরন্নবী, মরিয়ম খাতুন, শামীমা আক্তার সীমি প্রমুখ।